বেলগাভি: মাসখানেক আগেই দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজে পাঠরত ১৯ বছরের তেলঙ্গানার ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। এরইমধ্যে আরও এক মর্মান্তিক খবর। কলেজে ৪০ হাজার টাকা ফি দিতে পরিবার সমস্যায় পড়ায় আত্মঘাতী কর্ণাটকের বেলগাভির বিসিএ দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
২০ বছরের মেহক সাঙ্গোলিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তাঁর বাবা সাকিল সাঙ্গোলি।
সাকিল সাঙ্গোলি খানাপুর তালুকের বিডি গ্রামে তাঁদের বাড়ির শৌচাগারে মেহকের ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। মেহক উত্তর কন্নড় জেলার হালিয়ালে একটি বেসরকারি কলেজের পড়ুয়া ছিলেন।
সূত্রের খবর, সাকিল লকডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন। এরফলে পাঁচ সদস্যের পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েছিল। মেহকের মা গৃহবধূ। মেহকের দুই ভাই চতুর্থ ও দশম শ্রেনীর ছাত্র।
সাকিল সম্প্রতি নিকটবর্তী মুদি দোকানে তাঁর হেল্পার হিসেবে কাজ ফিরে পেয়েছিলেন। গত বুধবার বিকেলে বাড়িতে ফিরে মেয়েকে দেখতে পাননি। তখন তিনি ভেবেছিলেন, মেয়ে হয়ত নামাজ পাঠ করছে। এরপর তিনি খাওয়া-দাওয়া করে কাজে ফিরে যান। সন্ধেয় বাড়ি ফিরেও মেয়ের খোঁজ পাননি তিনি। এরপর দেখেন শৌচাগারের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। দরজা ভেঙে তিনি মেহককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
সাকিল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাঁর মেয়ে মেধাবী ছাত্রী ছিলেন এবং ভালো চাকরি জোগাড় করে পরিবারের দেখভাল করার স্বপ্ন ছিল তাঁর। নভেম্বরে কলেজ খোলার পর ৪০ হাজার টাকা ফি চাওয়া হয়েছিল। সাকিল বলেছেন, আমি টাকা জোগাড় করতে সমস্যায় পড়ায় ও খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিল। ও বলতে শুরু করেছিল যে, ও পরিবারের বোঝা হয়ে উঠেছে।
নন্দগড় পুলিশ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। সাব-ইন্সপেক্টর ইউএস অওস্তি বলেছেন, বাবাকে ফি-য়ের টাকা যোগাড়ে সমস্যায় পড়তে দেখে ওই ছাত্রী চরম পদক্ষেপ নেন। কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকার ফি দেওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলেছিল পরিবার।
পরিবারিক বন্ধু শামির বলেছেন, সাকিলের পরিবারে লকডাউন বড় আঘাত হানে। কলেজের ফি-র টাকা জোগাড়ে বাবার সমস্যা দেখেই মেহক এই চরম পদক্ষেপ নিয়েছে।