আগরতলা: হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের মধ্যে দূরত্বের ব্যবধান মুছে দিল উত্তর ত্রিপুরার উনকোটি জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম। সদ্যপ্রয়াত এক হিন্দু মহিলার নামে স্কুলের নামকরণের দাবি তুলেছেন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ যুবরাজনগর গ্রামের লোকজন।


গত ২৯ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছেন সুমতি সূত্রধর নামে এই মহিলা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ও তাঁর স্বামী বাংলাদেশ ছেড়ে ত্রিপুরার এই গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। তাঁরাই ছিলেন ওই গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবার। ১৯৯৯ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়েদের স্কুল তৈরির জন্য নিজের জমি সরকারকে দান করেন নিঃসন্তান সুমতিদেবী। শুরুতে প্রাথমিক স্কুল থাকলেও, ২০১০ থেকে এটি যুবরাজনগর কলোনি গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পরিণত হয়। এরপর মুসলিম মেয়েদের পাশাপাশি অন্যান্য গ্রামের হিন্দু মেয়েরাও এই স্কুলে পড়তে আসছে। এখন এই স্কুলে ছাত্রীসংখ্যা ৮২৩।

স্কুলেরই একটি ছোট্ট ঘরে থাকতেন সুমতিদেবী। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হত। তাঁর মৃত্যুতে গ্রামের সবাই শোকাহত। গ্রামবাসীরা সুমতিদেবীর নামে স্কুলের নামকরণের দাবি জানিয়ে সরকারকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যুবরাজনগরের এই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অঞ্জন বণিক বলেছেন, ‘সুমতিদেবীর জন্যই এই গ্রামের মেয়েরা পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে। তিনি মেয়েদের স্কুলের জন্যই জমি দান করেছিলেন। তাঁর সম্মান প্রাপ্য।’