উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনা বলেছে, কেজরীবালের সঙ্গে যা হচ্ছে, তা একেবারেই ঠিক নয়। দলের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, 'অরবিন্দ কেজরীবালের এই আন্দোলন অভিনব।এ ব্যাপারে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে নিজেই কেজরীবালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন'।
রাউত জানিয়েছেন, 'দিল্লির জন্য কেজরীবাল খুব ভালো কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন উদ্ধব। দিল্লির মানুষ কেজরীবাল সরকারকে নির্বাচন করেছে। কিন্তু এখন দিল্লিতে যা হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো নয়'।
শিবসেনার পাশাপাশি নীতীশ কুমারের দল জেডি(ইউ) কেজরীবালের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে। দলের নেতা পবন বর্মা বলেছেন, 'মুখ্য সচিবের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের পর যেখানে কেজরীবাল আশ্বাস দিয়েছেন যে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না, সেখানে আইএএস আধিকারিকদের অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়া উচিত। তাঁদের দিল্লিবাসীর জন্য কাজ করতে হবে'।
জেডি(ইউ) নেতা আরও বলেছেন, 'সরকারি আধিকারিকরা নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। এই ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক'।
শিবসেনা বরাবরই মোদী সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনায় সরব। অন্যদিকে, জেডি (ইউ)-ও নোট বাতিল, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিশেষ রাজ্যের তকমা নিয়ে কেন্দ্রের ভিন্ন সুরে কথা বলছে। এই দুটি দলই এবার কেজরীবালের পাশে দাঁড়াল।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
এছাড়াও, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং বামপন্থী দলগুলি এই ইস্যুতে কেজরীবালের পক্ষ নিয়েছে।
মমতা সহ চার মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের কাছে এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছিলেন।
মাসতিনেক আগে দিল্লির মুখ্যসচিব অংশু প্রকাশকে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর থেকে আইএএস আধিকারিকরা ধর্মঘট করছেন বলে অভিযোগ। কেজরীবাল সরকারের অভিযোগ, সরকারি আমলারা মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। এরফলে বিভিন্ন কাজকর্ম আটকে গিয়েছে।
কেজরীবালের ধর্ণাকে নাটক আখ্যা দিয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। এই ঘটনায় সবচেয়ে অস্বস্তিতে কংগ্রেস। অন্যান্য বিরোধী দলগুলি কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়েছে। এমনকি, কর্নাটকে কংগ্রেসের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা কুমারস্বামীও কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আম আদমি পার্টি এ ব্যাপারে কংগ্রেসকে নিশানা করেছে। দলের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বলেছেন, 'কংগ্রেসের ভেবে দেখা উচিত যে, যখন মণিপুর, উত্তরাখণ্ডে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়, তখন আম আদমি পার্টি কংগ্রেসের চেয়েও আগে সরব হয়েছিল। দিল্লিতে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরা হচ্ছে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের নীরবতা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কালো অক্ষরে লেখা থাকবে'।