নয়াদিল্লি: চাহিদা বৃদ্ধির জন্য ভারতকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্থিক উদ্দীপনামূলক প্যাকেজ সামনে রাখতে হবে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে চলতি যে লকডাউন চলছে, তা তুলে নেওয়ার পর মানুষের হাতে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার এটাই সেরা উপায়।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় চাহিদা বাড়াতে নিচের সারিতে থাকা জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের হাতে নগদ জোগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।
কোভিড-১৯ অতিমারির অর্থনীতিতে প্রভাব সম্পর্কে রাহুলের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে বিশিষ্টদের সঙ্গে রাহুলের আলোচনা কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে প্রচার করা হচ্ছে। এর আগে রাহুল রঘুরাম রাজনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন।
বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমেরিকা, জাপান ও ইউরোপ যেমনটা করছে, সেরকমই সংকটের মোকাবিলায় ভারতেও একটা বড়সড় পর্যাপ্ত উজ্জীবক প্যাকেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, এ ধরনের প্যাকেজ সম্পর্কে ভারতে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র জিডিপি-র ১ শতাংশের কথা শোনা যাচ্ছে। আমেরিকা জিডিপি-র ১০ শতাংশ বরাদ্দের কথা জানিয়েছে।
ঋণ শোধে স্থগিতাদেশ কার্যকরী পদক্ষেপ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। অর্থনীতিবিদ বলেছেন, এর থেকেও বেশি কিছু করা যেতে পারে। এমনকি এই ত্রৈমাসিকের জন্য ঋণের কিস্তি শোধ বাতিলও করা যেতে পারে। এবং সরকার বিষয়টির ভার নেবে।
এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রস্তাবিত ন্যায় প্রকল্প বা মানুষের হাতে সরাসরি নগদ হস্তান্তর এই মুহুর্তে প্রয়োজন কিনা, রাহুলের এই প্রশ্নের উত্তরে বন্দ্যোপাধ্যায় এতে সায় দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, এমনটা শুধু সবচেয়ে বেশি দরিদ্রদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। তিনি বলেছেন, নিচের সারির ৬০ শতাংশ জনসংখ্যার হাতে কিছু অর্থ দেওয়া গেলে, তা আদৌ খারাপ হবে না। ওই অর্থ খরচ হলে চাহিদা বাড়বে।
খাদ্য বন্টন সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলায় সরকার লোকজনকে সাময়িক রেশন কার্ড দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।




অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, করোনা উত্তর-পর্বে আর একটি উদ্বেগের বিষয়টি হয়ে উঠতে পারে দেউলিয়া হওয়ার ঘটনার শৃঙ্খল। বিভিন্ন সংস্থার দেউলিয়া হয়ে পড়া আটকাতে ঋণ মকুব উপায় হতে পারে। অন্য উদ্বেগের বিষয় হল, চাহিদা কমে যাওয়া। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে মানুষের হাতে টাকার জোগান দেওয়ার প্রস্তাবও তিনি দিয়েছেন।