কলকাতা: এবিপি আনন্দ-সিএসডিএস-লোকনীতির সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশেই মোদী সরকারের জনপ্রিয়তা গত বছর মে মাসে করা সমীক্ষায় তুলনায় কমছে! এমনকি সমীক্ষায় এমনও ইঙ্গিত, যে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাধিক্য মানুষ মোদী অপেক্ষা মমতাকেই প্রধানমন্ত্রীর আসনে দেখতে চাইছেন। কিন্তু, গোটা দেশের মনোভাবটা কী রকম?
২০১৭-র মে মাসের সমীক্ষায় দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁদের প্রথম পছন্দ নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, আট মাসের মাথায় এবারের সমীক্ষায় ৩৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চান।
উল্টোদিকে এই আট মাসে রাহুলের জনপ্রিয়তা যে অনেকটাই বেড়েছে, সমীক্ষায় তার স্পষ্ট ইঙ্গিত। ২০১৭-র মে মাসের সমীক্ষায় দেশের মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁদের পছন্দ রাহুল গাঁধী।
কিন্তু, আট মাসের মাথায় এখন করা সমীক্ষায় সেই সংখ্যাটা ডবলের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে। অর্থাৎ আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখন রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাইছেন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০১৮, এই চার বছরের মধ্যে এই মহূর্তে রাহুলের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি! ২০১৪-র মে মাসের সমীক্ষায় রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন দেশের ১৪ শতাংশ মানুষ। ২০১৭-র মে মাসের সমীক্ষায় তা কমে দাঁড়ায় ৯ শতাংশ। কিন্তু, গত আট মাসে তা এক লাফে বেড়ে হয়েছে ২০ শতাংশ।
এমনকি সমীক্ষার ফল বলছে, দক্ষিণ ভারত যেখানে কেরল-তামিলনাড়ুতে জমি শক্ত করার চেষ্টা করছে বিজেপি, এবং কর্ণাটকে ফের ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে তারা, সেই দক্ষিণ ভারতে প্রধানমন্ত্রীত্বের রেসে মোদীকে পেছনে ফেলে দিচ্ছেন রাহুল। সমীক্ষার ফল অনুযায়ী দক্ষিণ ভারতের ২৪ শতাংশের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রথম পছন্দ মোদি। কিন্তু, ২৭ শতাংশের পছন্দ রাহুল গাঁধী।
যদিও, পূর্ব পশ্চিম ও মধ্য ভারত এবং উত্তর ভারতে প্রধানমন্ত্রীত্বের রেসে এগিয়ে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, রাহুলের জনপ্রিয়তা বাড়লেও, তা কি কংগ্রেসকে ফের দিল্লির ক্ষমতায় ফেরাতে পারে? সমীক্ষার ফল কিন্তু তা বলছে না।
এবিপি আনন্দ-সিএসডিএস লোকনীতি সমীক্ষা অনুযায়ী এখন ভোট হলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ পেতে পারে ২৯৩ থেকে ৩০৯টি আসন। গত লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ পেয়েছিল ৩৩৬টি আসন। অর্থাৎ ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হলেও তাদের আসন কমার ইঙ্গিত।
গত নির্বাচনে বিজেপি একাই পেয়েছিল ২৮২টি আসন। এবারের সমীক্ষায় যা ইঙ্গিত তাতে কিন্তু বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে। অর্থাৎ জয় এলেও, কাঁটাও থাকতে পারে।
উল্টোদিকে এবারের সমীক্ষা অনুযায়ী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ পেতে পারে ১২২ থেকে ১৩২টি আসন। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগারের থেকে অনেক কম। যদিও, গত লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ পেয়েছিল ৬০টি আসন। অর্থাৎ তাদের আসন বাড়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট।
কিন্তু, তার সঙ্গে এটাও ঠিক, যে সমীক্ষার ফল বলছে, রাহুল কংগ্রেসকে ৪৪ থেকে ১০০-র কোটা পার করাতে সক্ষম হলেও, জয়ের কাছাকাছি জায়গাতেও নিয়ে যেতে পারছেন না। শেষ অবধি কী হবে, তা অবশ্য জানা হবে ভোট হলে।