নয়াদিল্লি: খোদ ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার শিশু। তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ২০১৫ সালে নিখোঁজ হয়েছে ২,১৭০ টি শিশু। নিখোঁজের তালিকায় ছেলেদের থেকে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। ১,৩৩৫ টি বালিকা এবং ৮৩৫টি বালক হারিয়ে গিয়েছে।

 

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ’ (ক্রাই) তথ্যের অধিকার আইনে দিল্লি থেকে এত শিশু নিখোঁজ হওয়ার কথা জানতে পেরেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ০ থেকে ৮ এবং ৮ থেকে ১২ বছর বয়সিদের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ছেলে-মেয়ের হারিয়ে যাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। দিল্লি থেকে এত শিশু-কিশোর-কিশোরী নিখোঁজ হলেও, নয়ডা থেকে নিখোঁজের সংখ্যা কয়েক গুণ কম। ২০১৫ সালে নয়ডা থেকে নিরুদ্দেশ হয়েছিল ৬৪টি বাচ্চা। তাদের মধ্যে ৪৪ জনেরই খোঁজ পেয়েছে পুলিশ।

 

দিল্লি থেকে এত শিশু হারিয়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছে এবিপি আনন্দ। এ বিষয়ে ক্রাই-এর উত্তর ভারতের আঞ্চলিক অধিকর্তা সোহা মৈত্র বলেছেন, দিল্লির বেশিরভাগ দম্পতিই চাকরি বা ব্যবসা করেন। তাছাড়া দিল্লিতে অনেক বস্তি আছে। এই কারণেই নয়ডার চেয়ে দিল্লিতে নিখোঁজ শিশুর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে নয়ডাতেও ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের হারিয়ে যাওয়ার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি মেয়েদের হয় জোর করে দেহব্যবসায় নামানো হচ্ছে অথবা কারও বাড়িতে কাজের লোক হিসেবে রাখা হচ্ছে।

সোহা মৈত্র

সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত তিন বছরে নিরুদ্দেশ হওয়া ৮৪ শতাংশ শিশুরই খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালে সারা দেশে যেখানে ৩৪,২৪৪টি শিশু হারিয়ে গিয়েছিল, ২০১৫ সালে সেই সংখ্যাটাই বেড়ে হয়েছে ৬২,৯৮৮। এই নিখোঁজ শিশুদের সংগঠিত অপরাধ, বেআইনি শিশুশ্রমে কাজে লাগানো হচ্ছে অথবা তাদের অঙ্গ বিক্রি করা হচ্ছে। সোহার মতে, এই সমস্যা দূর করতে গেলে সরকারের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো দরকার। পুলিশকেও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।