মুম্বই: বন্ধুদের সঙ্গে ব্লু হোয়েল-এর আলোচনা করতে করতে মুম্বইয়ের কিশোর মনপ্রীত সিংহ আগেও আত্মহত্যার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু, বন্ধুরা নিছকই মজা মনে করেছিল।


এমনকী, আত্মহত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে মনপ্রীত তার সহপাঠীদের জানায়, সে আর স্কুলে আসবে না। এমনই নেশা মারণ অনলাইন ভিডিও গেম ‘ব্লু হোয়েল’ বা নীল তিমির। যাকে এখন ভয়ঙ্কর বলে উল্লেখ করছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। এর আগে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মারণ অনলাইন ভিডিও গেমের শিকার হতে হয়েছে বহু কিশোর-কিশোরীকে বলে অভিযোগ।


শনিবার মুম্বইয়ের ১৪ বছর বয়সী কিশোর মনপ্রীত বহুতলের ৬ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, এই আত্মহত্যাই এদেশে ব্লু হোয়েল-এর প্রথম শিকার কি না। তদন্তে নেমে মনপ্রীতের মোবাইল ফোন সহ অন্যান্য গ্যাজেট পরীক্ষা করছে পুলিশ।


এদিকে, কিশোরের মৃত্যুর পরই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফঢ়ণবীশ জানিয়েছেন, নিজের আশঙ্কার কথা কেন্দ্রকে তিনি জানাবেন। বলেন, এই ব্লু হোয়েল গেমটি ভীষণই বিপজ্জনক। এই গেমের ফলে সকলেই উদ্বিগ্ন। কেন্দ্রকে সেই উদ্বেগের কথা জানাব।



পুলিশ জানিয়েছে, অন্ধরির বাসিন্দা নবম শ্রেণির ওই কিশোর কিছুদিন আগে ওই গেম নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেছিল। সে যখন আত্মহত্যার কথা জানায়, তখন সকলেই তা মজা হিসেবে নিয়েছিল। কিন্তু, তারা কল্পনাও করতে পারেনি, সত্যিই তাদের বন্ধু এমন কাজ করবে।


শনিবার, বিকেল ৫টা নাগাদ যখন ওই কিশোর ৬ তলা থেকে ঝাঁপ দেয়, তখন এক প্রত্যক্ষদর্শী সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ফোন করেন। চার বছর আগে রাশিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেছিল ভিডিও গেম ‘ব্লু হোয়েল’ বা নীল তিমি। প্রসঙ্গত, সেখানে প্রতিযোগীদের মোট ৫০টা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। প্রথমদিকে সোজা—যেমন কাগজে নীল তিমি এঁকে শরীরের সঙ্গে সেঁটে দেওয়া, ভোর ৪টের সময় উঠে ভয়ের ছবি দেখা।


ধাপ যত বাড়তে থাকে ততই তা হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক— যেমন হাত কেটে তাতে কিছু লেখা বা আঁকা। আর একদম শেষে? ছাদ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন শেষ করে দেওয়া। তবে মুখে করেছি বললে চলবে না। সব কিছুর ভিডিও তুলে প্রমাণ পাঠাতে হবে।


এই প্রসঙ্গে, মুম্বই পুলিশের পরামর্শ, অভিভাবকদের উচিত ছেলেমেয়েদের ওপর নজর রাখা। তারা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, এমনকী অনলাইনে তাদের গতিবিধির ওপরও খেয়াল রাখা উচিত।