গুরগাঁও: যে বিচারব্যবস্থার ওপর ভরসা রেখে প্রতিদিন আদালতমুখো হন অসংখ্য মানুষ, কেমন লাগবে যদি তাদেরই একজন শুধুমাত্র পুত্রসন্তানের জন্ম না দিতে পারায় খুন করে ফেলেন নিজের স্ত্রীকে? বধূ নির্যাতনের মামলায় কোথাও সুবিচার না পেয়ে অত্যাচারিতা শেষমেষ ভরসা রাখেন আদালতের ওপর। সেই আদালতেরই একজন যখন কন্যার থেকে এত উঁচুতে পুত্রসন্তানকে বসান, যে পুত্রের জন্ম দিতে না পারায় স্ত্রীকে খুন করতেও তাঁর হাত কাঁপে না, তখন কি টলে যায় না সেই ভরসাটাই? অভিযোগ, এমনই হয়েছিল গুরগাঁওযের গীতাঞ্জলি গর্গের সঙ্গে। বছর তিনেক আগে ২৭ বছরের গীতাঞ্জলির দেহ উদ্ধার হয় স্থানীয় একটি পার্ক থেকে। দেহে বেশ কয়েকটি বুলেটের ক্ষত ছিল। গীতাঞ্জলির স্বামী রভনীত গর্গের বিরুদ্ধে পণের দাবিতে খুনের মামলা রুজু করে মৃতার পরিবার। জানা যায়, গীতাঞ্জলি ও রভনীতের ৪ ও ৫ বছর বয়সি দুটি মেয়ে ছিল। কিন্তু পুত্রের জন্ম না হওয়ায় স্ত্রীর ওপর প্রচণ্ড অসন্তুষ্ট ছিলেন স্বামী।


কৈথাল এলাকার সিভিল জজ রভনীত খুনের সময় গুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। মৃতের দেহের পাশ থেকে তাঁর রিভলভার উদ্ধার হওয়ায় তাঁর ওপর সন্দেহ বাড়ে। স্বচ্ছ বিচারের দাবিতে গীতাঞ্জলির বাবা মা হরিয়ানার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডার শরণাপন্ন হন। মামলাটি হাতে নেয় সিবিআই। কিন্তু তদন্ত এগোয়নি এতটুকু।

রভনীতের লাই ডিটেক্টর টেস্ট করে পুলিশ। হয় ব্রেন ম্যাপিংও। তাতেও নাকি বিশেষ কিছু পাওয়া যায়নি। এই খুন সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে পারলে ৫লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে সিবিআই। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আইনের হাতকড়ার বাইরেই থেকে যান রভনীত।

গীতাঞ্জলির হতাশ পরিজনবর্গ শেষমেষ প্রধানমন্ত্রীর অফিসের দ্বারস্থ হন। তারপরেই গতি পায় তদন্ত। রভনীতকে গ্রেফতার করে পুলিশ, তাঁকে ৫দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। গীতাঞ্জলির বাবা মায়ের আশা, তাঁদের মৃত কন্যা অবশেষে বিচার পাবেন।