মুম্বই:  ডিজিটাল অর্থনীতি চালুর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গতবছর ৫০০ ও হাজারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এবার চেক বই ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ভাবনা রয়েছে মোদী সরকারের, খবর সূত্রের। ২০১৬ সালে স্বল্প নোটিসে ৫০০ ও হাজারের নোট বাতিলের জেরে সাময়িকভাবে ধাক্কা খেয়েছিল ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধির হার। কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তের জেরে সেই সময় বাজার থেকে আচমকা ৮৬ শতাংশ নোট উবে গিয়েছিল।  সরকারের তরফে বলা হয়, ক্যাশলেস অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে মোদী সরকার। সেই পদক্ষেপের প্রথম ধাপ ছিল এটি।


সম্প্রতি পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে কনফিডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের এক প্রবীণ আধিকারিক প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ডিজিটাল লেনদেনকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করতে, খুব শীঘ্রই হয়তো কেন্দ্রের তরফে চেক বইয়ের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে। ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে মানুষকে সজাগ করতে খান্ডেলওয়াল বলেন, সরকারের উচিত ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট আরও সহজ করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, এখন ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে ব্যাঙ্ক এক শতাংশ চার্জ করে, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলে ২ শতাংশ চার্জ করা হয়। এদিকে নোট ছাপাতে সরকারের এখন ২৫ হাজার কোটি টাকা মতো খরচ হয় এবং সেই নোটের নিরাপত্তার জন্যে প্রায় ছ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। এই পুরো খরচ কমাতে এবং ডিজিটাল পেমেন্টকে মানুষের মধ্যে আরও জনপ্রিয় করতে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে আরও সরলীকরণ প্রয়োজন, মত খান্ডেলওয়ালের। এমনকি যাতে ব্যাঙ্ক কার্ডের ব্যবহারে কোনও চার্জ না করে, সেই জন্যে ভর্তুকি দেওয়া উচিত সরকারের, মত ওই আধিকারিকের।

তবে আচমকা যদি চেক বইয়ের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে মারাত্মক অসুবিধায় পড়বেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, ব্যবসায়ীদের এখনও সিংহভাগ লেনদেনই নগদে বা চেকে হয়। এছাড়া নোট বাতিলের পরবর্তী পর্যায়ে চেক বইয়ের ব্যবহারও অনেক বেড়েছে। প্রসঙ্গত, তথ্য বলছে নোট বাতিল পরবর্তী সময় ডিজিটাল লেনদেন বাড়লেও, দেশের সিংহভাগ মানুষ এখনও নগদে লেনদেন করতেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন। যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে প্রকাশিত তথ্য বলছে, নোট বাতিলের আগে বাজারে ১৭.৯ লক্ষ কোটি টাকা নগদ ছিল। নোট বাতিলের পর ১৬.৩ লক্ষ কোটি টাকা নগদ রয়েছে বাজারে। গত বছর নভেম্বর থেকে এই বছর সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেনের হার ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।