লখনউ: পছন্দমতো খাবার খেতে পারা এবং খাদ্যসামগ্রীর ব্যবসা করতে পারাটা জীবনের অধিকারের মধ্যে পড়ে। রাজ্যজুড়ে অবৈধ কসাইখানা বন্ধ-সংক্রান্ত মামলায় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এমনটাই জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।


একইসঙ্গে, অবৈধ কসাইখানা নিয়ে রাজ্যের ভাবনাচিন্তা কী, তা ১০ দিনের মধ্যে স্থির করতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছে আদালত, যাতে করে সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে মানুষ জীবিকা অর্জন করা থেকে বঞ্চিত না হন।


সোমবার এলাহাবাদ উচ্চ আদালতের লখনউ বেঞ্চ জানায়, উত্তরপ্রদেশের মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস রয়েছে। আর এটা রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


বন্ধ হয়ে যাওয়া দোকানের লাইসেন্স পুনর্নবিকরণ করা নিয়ে রাজ্য সরকারের থেকে স্পষ্ট নির্দেশিকা চাওয়ার দাবি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক মাংস-বিক্রিতা।


ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁর দোকানের লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছে। নবিকরণেও গড়মসি করছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ফলে তাঁর ব্যবসা মার খাচ্ছে এবং তাঁর জীবিকা অর্জন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।


ওই ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলার শুনানিতে আদালত এদিন জানায়, বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করা যেমন জরুরি, তেমনই (সরকারের উচিত) গুরুত্বপূর্ণ আইনি কাজে যাতে কোনও বাধা না আসে তা নিশ্চিত করা।


বিচারপতি অমরেশ্বর প্রতাপ শাহি ও বিচারপতি সঞ্জয় হরকৌলির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ যোগ করে, এই বিষয়টি বিশেষ করে মাথায় রাখতে হবে যেখানে খাদ্য, খাদ্যাভ্যাস এবং খাবারের ব্যবসা জড়িত। কারণ, তা নির্বিবাদভাবেই জীবন ও জীবনধারনের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত।


আদালত আরও জানায়, যে খাবার স্বাস্থ্যসম্মত, তাকে কখনই ‘ভুল পছন্দ’ বলে গণ্য করা যাবে না। উপরন্তু, রাজ্যকে নিশ্চিত করতে হবে, স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের জোগান যেন কোনওভাবে বাধাপ্রাপ্ত না হয়।


যদিও, রাজ্য তার জবাবে জানায়, রাজ্যের সবকটি কসাইখানা বন্ধ করা বা গো-মাংসের খাওয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের। তারা শুধু শীর্ষ আদালতের রায়কে মান্যতা দিয়ে অবৈধ কসাইখানা বন্ধের ওপর জোর দিচ্ছে।


এই প্রেক্ষিতে বৈধ কসাইখানার লাইসেন্স পুনর্নবিকরণের বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখতে আদালত নির্দেশ দিয়েছে আদিত্যনাথ প্রশাসনকে। উত্তরে রাজ্য জানায়, মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে শীঘ্রই একটি বৈঠক ডাকা হবে।