ইসলামাবাদ: গতকাল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ভারতে ফেরার সম্মতি পেয়ে বৃহস্পতিবারই চলে এলেন দিল্লির বাসিন্দা উজমা। দিল্লির বাসিন্দা এই ২২ বছরের মহিলা এক পাকিস্তানি তাঁকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে, তাঁর ওপর যৌন নির্যাতনও চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাহির আলি নামে ওই পাকিস্তানি তাঁর অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে উজমা ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ভারতে ফেরার অনুমতি চান।

তাহির উজমার অভিবাসনের নথি জমা দেওয়ার পর গতকালই তাঁকে তা ফেরত্ দেয় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।

আদালতের নির্দেশমতো আজ সকালে উজমাকে ওয়াগা সীমান্ত পর্যন্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় পৌঁছে দেয় পাক পুলিশ। তাঁর সঙ্গে আসেন সেখানকার ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসাররাও। ওয়াগা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মাটি স্পর্শ করেন তিনি।

উজমার দেশে ফেরাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তাঁকে 'ভারত কন্যা' বলেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ট্যুইট করেছেন, আপনাকে যে ঝক্কি-ঝামেলা সহ্য করতে হল, সেজন্য দুঃখিত। মানবিকতার খাতিরে উজমাকে ভারতে ফিরতে সাহায্য করায় সুষমা ধন্যবাদ জানান পাক সরকার, বিচার বিভাগকেও।

তাহিরের সঙ্গে উজমার আলাপ নাকি মালয়েশিয়ায়। দুজনের প্রেম হয়। ১ মে পাকিস্তান পৌঁছন উজমা। তিনি যান খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রত্যন্ত বুনের জেলায়। সেখানেই ৩ মে তাহিরকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। ইসলামাবাদ ফিরে তিনি ভারতীয় হাইকমিশনে আশ্রয় নেন।

১২ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দিয়ে উজমা অভিযোগ করেন, তাহির গোপন করে গিয়েছিলেন যে, তিনি বিবাহিত, সন্তানও আছে। তাছাড়া, ভারতে তাঁর আগের পক্ষের কন্যাসন্তান দুরারোগ্য থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। তাই তাঁকে অবিলম্বে ভারতে ফিরতে হবে। পাল্টা হাইকোর্টে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়ার আবেদন করেন তাহিরও। তবে উজমা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান না বলে জানিয়ে দেন।

পাকিস্তানের আইন অনুসারে হাইকোর্টে উজমার আইনজীবী তাঁর হয়ে মামলা চালিয়ে যেতে পারেন, চাইলে তিনিও মামলা লড়তে পাকিস্তানে ফিরতে পারেন।