জম্মু: গত রাতে কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গি হামলায় মৃত ও আহত যাত্রীদের আজ দিল্লিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংহ এ কথা জানিয়েছেন।


তিনি বলেছেন, হতাহতদের প্রথমে শ্রীনগরে নিয়ে আসা হবে। সেখান থেকে বিএসএফের বিশেষ বিমানে আনা হবে দিল্লিতে। আহতদের প্রাণের আশঙ্কা নেই বলেও উপ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।

প্রশাসন জানিয়েছে, হামলার পর নিয়ম মেনেই চলবে অমরনাথ যাত্রা, তবে তা হবে জম্মু থেকে। যাত্রা চলছে আজও, জম্মু থেকে যাত্রীরা রওনা দিয়েছেন পবিত্র গুহার উদ্দেশে।

নিরস্ত্র যাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে জম্মু চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আজ জম্মুতে বনধ ডেকেছে। বনধ সমর্থন করেছে বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্স, তাদের দাবি, রাজ্যের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোয় আঘাত করতে এই হামলা। হামলার পর গোটা উপত্যকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাত আটটা কুড়ি নাগাদ অনন্তনাগ জেলার খানাবাল এলাকায় তীর্থযাত্রীদের বাসের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে জঙ্গিরা। এতে ৭ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন ১৯ জন। ২ দিন আগে অমরনাথ দর্শন শেষ করে তাঁরা ফেরার বাস ধরেছিলেন।

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাতটা আক্রান্ত বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কাটিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রত্যেক কাশ্মীরীর মাথা এই ঘটনায় লজ্জায় নত হয়েছে। এই হামলা মুসলিম ও কাশ্মীরীদের ওপর কলঙ্ক এনে দিল।

কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, হামলার তদন্ত শুরু করেছে তারা। আজ অমরনাথ যাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ দল।

মৃত যাত্রীদের মধ্যে ৫ জন গুজরাটের বাসিন্দা, ২ জন মহারাষ্ট্রের।

সিআরপিএফ জানিয়েছে, তীর্থযাত্রীদের ওই বাসটি গুজরাতের সবরকান্থা জেলায় রেজিস্টার্ড। কিন্তু অমরনাথ শ্রাইন বোর্ডে রেজিস্ট্রি না থাকায় তা তীর্থযাত্রীদের কনভয়ের অংশ ছিল না। তা ছাড়া অমরনাথ যাত্রীদের জন্য যে সন্ধে সাতটার হাইওয়ে কারফিউ, তা লঙ্ঘন করেছিল ওই বাস। নিয়ম অনুযায়ী সন্ধে সাতটার পর অমরনাথ যাত্রার কোনও বাসে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয় না, কার ওই সময়ের পর হাইওয়েতে তীর্থযাত্রীদের বাস নামার নিয়ম নেই।

২০০১-এর পর এই প্রথম অমরনাথ যাত্রীদের ওপর হামলা চালাতে সক্ষম হল জঙ্গিরা। সে বছর অমরনাথ গুহার কাছে শেষনাগ এলাকায় জঙ্গি হামলায় ১৩ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়। তার আগের বছরই জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান কয়েকজন কুলি সহ ৩০ জন অমরনাথ যাত্রী।

এবারেও গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল, জঙ্গিরা অন্তত ১০০ তীর্থযাত্রীকে মেরে ফেলার ছক কষেছে। সেইমতো নিরাপত্তার কড়াকড়িও করা হয়। তারপরেও এই হামলা প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তার ফাঁকফোকর নিয়ে।