নয়াদিল্লি: লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের সঙ্গে চলতি সংঘাতের মধ্যে ভারত প্যাংগং লেকে টহলদারির জন্য ১২ টি নতুন অত্যাধুনিক বোটের অর্ডার দিয়েছে। এই নতুন বোটগুলি ভারতেরই কোনও বড় শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হবে। জানা গেছে, এই টহলদারি বোটগুলি সেনা ও আইটিবিপি এখন যে বোট ও স্টিমারগুলি ব্যবহার করছে, সেগুলির তুলনায় অনেকটাই বড়। চিনা বোটের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতিতে শত্রুপক্ষের সঙ্গে টক্করে পাল্লাভারি রাখতে পারে এই নতুন বোটগুলি।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে এই নতুন বোটগুলি দ্রুততার ভিত্তিতে তৈরি করতে বরাত দেওয়া হয়েছে, যাতে খুব তাড়াতাড়ি সেগুলিতে করে সেনা হ্রদে টহলদারি চালাতে পারে।
উল্লেখ্য, প্যাংগং লেকে টহলদারির জন্য ভারতীয় সেনা ও আইটিবিপি এখনও পর্যন্ত যে বোট (স্টিমার) গুলি ব্যবহার করে তা খুবই ছোট। জানা গেছে, এমনও হয়েছে যে, টহলদারির সময় কখনও কখনও চিনের বড় বোটগুলি ভারতের বোটগুলিতে ধাক্কাও মেরে দেয়। কয়েক বছর আগে এমনই একটি টক্করে ভারতীয় বোট উল্টে গিয়েছিল।
চলতি বছরে মে মাসে পূর্ব লাদাখ সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় এক সংঘাতের পর মনে করা হচ্ছে যে, প্যাংগং-স্নো লেকেও উত্তেজনা বাড়তে পারে। কেননা, ভারত ও চিনের মধ্যে ৩৪৮৮ কিমি দীর্ঘ এলএসি এই লেকের মধ্য দিয়েই গিয়েছে। আর চিনা সেনা প্যাংগং সংলগ্ন ফিঙ্গার এরিয়ার এইট থেকে এগিয়ে ফিঙ্গার ফোরে গেড়ে বসেছে। কাজেই মনে করা হচ্ছে, চিন ফিঙ্গার চারের পর ভারতের সেনা টহলদারিতে আপত্তি জানাতে পারে। যদিও এমন কোনও ঘটনা এখনও পর্যন্ত ঘটেনি।
যাই হোক, সম্ভাব্য সমস্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভারতীয় নৌসেনার একটি বিশেষজ্ঞ দল প্যাংগং লেক পর্যবেক্ষণ করেছিল। লেকে টহলদারি ও টহলদারির বোট নিয়ে নৌসেনার দল তাদের মতামত জানিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নৌসেনার ফাস্ট পেট্রোলিং বোট সমুদ্রে জলদস্যু ও অবাঞ্ছিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে টহলদারি চালায়। ভারতীয় নৌসেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে ফাস্ট পেট্রোলিং বোটের বড় সম্ভার রয়েছে।
এলএসি-তে ভারত ও চিনের প্রধান বিবাদ এই ফিঙ্গার এলাকা নিয়েই। কেননা, মে মাসের আগে চিনা সেনা ফিঙ্গার এইট-র পিছনে সিরিজাপে থাকত। কিন্তু ৫-৬ মে চিন অবৈধভাবে ফিঙ্গার এইট থেকে ফিঙ্গার ফোর পর্যন্ত কব্জা করেছিল।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৪ হাজার ফুট উঁচুতে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা লেক প্যাংগং । এটি প্রায় ১৩৫ কিমি লম্বা। এর এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৪০ কিলোমিটার ভারতের অধিকার ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ প্রায় ৯৫ কিমি রয়েছে চিনের কব্জায়। শীতের সময় এখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৩০-৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নেমে যায় এবং হ্রদ পুরোপুরি জমে যায়।