আমদাবাদ: গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন আনন্দিবেন পটেল।


নিজের সিদ্ধান্তের যুক্তির স্বপক্ষে এদিন ফেবসুকে আনন্দিবেন লিখেছেন, তিনি নভেম্বরে ৭৫ বছর পূর্ণ করছেন, তাই নতুনদের কাজের সুযোগ করে দিতে চান। তিনি আরও জানান, বিগত বেশ কিছু সময় ধরে একটা প্রথা চলে আসছে। তা হল, যাঁরা ৭৫ বছর পার করছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।

রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেনের মতে, আগামী ২১ নভেম্বর তিনি ৭৫ পূর্ণ করবেন। তাই প্রথা হিসেবে তিনি আগাম সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর দাবি, দুমাস আগেই তিনি এই মর্মে দলকে জানিয়ে রেখেছেন।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী দিল্লির মসনদে আসীন হওয়ার পর সেই জায়গায় গুজরাতের দায়িত্বভার তুলে নেন আনন্দিবেন। তার আগে ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন।

তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, বয়স ফ্যাক্টরের চেয়ে আনন্দিবেনের সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে ব্যর্থতার ফ্যাক্টরই বেশি দায়ী। প্রসঙ্গত, মোদী-জমানার পর গুজরাতে বেশ কিছু সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এর মধ্যে অন্যতম হল পটেল সম্প্রদায়ের আন্দোলন। দ্বিতীয়টি সাম্প্রতিক ঘটনা। উনায় দলিতদের ওপর অত্যাচারের বিষয়টিও বর্তমান শাসক দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।

এর পাশাপাশি, মোদীর রাজ্যে সাম্প্রতিকালে গেরুয়া-শিবিরের প্রভাব কিছুটা হলেও ফিকে হয়েছে। যার প্রমাণ গত বছরের ডিসেম্বরে রাজ্যে পুরনির্বাচনে বিজেপি কার্যত ধরাশায়ী হয়েছে। অন্যদিকে, প্রায় শিকি-শতক পর সেখানে আশাতীত ভাল ফল করেছে কংগ্রেস, যার জেরে শাসক দলের মুখ পুড়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সব মিলিয়ে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ চাপে বিজেপি। তাই হয়ত নির্বাচনের আগে নতুন ‘ভাইব্র্যান্ট’ মুখ আনতে তৎপর হয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পরোক্ষে সরে দাঁড়ানোর চাপ বাড়ছিল আনন্দিবেনের ওপর। যদিও, মুখে সেই কথা একবারও আনেননি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। শুধু বললেন, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ সম্মেলনের আগেই যাতে নতুন মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব নিতে পারেন, তার জন্যই আগে থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি।

এদিকে, আনন্দিবেনের সরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানিয়েছেন, পদত্যাগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংসদীয় বোর্ড। সূত্রের খবর, আনন্দিবেনকে পঞ্জাবের রাজ্যপাল করা হতে পারে।