নয়াদিল্লি: লোকসভার ডেপুটি স্পিকার তথা বিজেপি সাংসদ রমাদেবীর উদ্দেশ্যে করা আজম খানের মন্তব্য ঘিরে বৃহস্পতিবার উত্তাল হল লোকসভা। সমাজবাদী পার্টি নেতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন শাসক দলের সাংসদরা। প্রতিবাদের মুখে আজম খানের সাফাই, কিছু আপত্তিজনক বলে থাকলে, তিনি ইস্তফা দেবেন।
এদিন সভায় তিন তালাক বিল নিয়ে বিতর্ক-আলোচনা চলাকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে আজমকে একটি শ্লোক বলতে শোনা যায়, ‘তু ইধর-উধর কি বাত না কর..!’ এই প্রেক্ষিতে সভার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রমাদেবী তখন আজমের উদ্দেশ্যে বলেন, এদিক-ওদিক না তাকিয়ে চেয়ারের দিকে তাকিয়ে বলুন। এরপরই, ডেপুটি স্পিকারের উদ্দেশ্যে যৌন-ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। তাঁর এই মন্তব্যে সভায় শোরগোল পড়ে যায়। তীব্র প্রতিবাদ জানান শাসক দলের সাংসদরা। পরে, রমাদেবী জানান, তিনি আজম খানের ছোট বোনের মতো। পরে, আজম খানের মন্তব্যের অংশটি সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন রমাদেবী।
কিন্তু, আজম খানের মন্তব্যে ঝড় ওঠে নিম্নকক্ষে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও অর্জুন রাম মেঘওয়াল ডেপুটি স্পিকারকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন আজম খানকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন। সেই মতো, আজম খানকে নির্দেশ দেন রমাদেবী। জবাবে, সপা নেতা বলেন, তিনি রমাদেবীর অসম্মান করতে চাননি। রমাদেবী তাঁর ছোট বোনের মতো। এই পরিস্থিতিতে, আজম খানকে সমর্থন করতে দাঁড়িয়ে পড়েন সপা সভাপতি তথা সাংসদ অখিলেশ যাদব।
এর মধ্যেই, সভা পরিচালনার দায়িত্ব নেন স্পিকার ওম বিরলা। বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশ্যে আচরণ-সংক্রান্ত মন্তব্য করেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। যা নিয়ে তিনি স্পিকারের রোষে পড়েন। অখিলেশকে ক্ষমা চাইতে বলেন স্পিকার এটা মনে করিয়ে দিয়ে, তিনি একটি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরে অখিলেশ জানান, তাঁর মন্তব্য প্রথমে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে উড়ে এসেছে। তখন স্পিকার বলেন, যিনি বলেছেন, তাঁকে চিহ্নিত করুন এবং নিজেও ক্ষমা চান।
এই পরিস্থিতিতে আজম জানান, তিনি যদি কোনও অংসদীয় ভাষা প্রয়োগ করে থাকেন, তাহলে এখনি ইস্তফা দেবেন। এরপরই, সভাকক্ষ ত্যাগ করেন সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, সংসদে যা ঘটল তা অনভিপ্রেত। লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, সভা সঠিকভাবে চলছে কি না, তা দেখা উচিত স্পিকারের। যা শুনে ওম বিরলা বলেন, এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়, যা কার্যবিবরণী থেকে পরে বাদ দিতে হয়।