লখনউ: উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জের সাম্প্রতিক গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে ফেসবুক পোস্টে পার্শ্ববর্তী বরেলির জেলা শাসক লেখেন, 'সংখ্যালঘু মহল্লায় জোর করে ঢুকে পাক-বিরোধী স্লোগান তোলা একটা অদ্ভূত প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে'। পরে ওই ট্যুইট সরিয়ে দেওয়া হয়।
ফেসবুক পোস্টে বরেলির জেলাশাসক রাঘবেন্দ্র বিক্রম সিংহ গত সোমবার লেখেন, 'এ তো অদ্ভূত রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘু মহল্লায় জোরজবরদস্তি করে মিছিল নিয়ে যাও আর পাকিস্তান মুর্দাবাদ ধ্বনি দাও। কেন ভাই, ওরা পাকিস্তানি নাকি? এটাই এখানে বরেলির খৈলামেও হয়েছিল। পাথর ছোঁড়া হয়েছিল, মামলা দায়ের হয়েছিল'।
গত বছর বরেলির খৈলাম গ্রামে প্রায় ২০ জন কানওয়ারিয়া ও ১৫ জন আইটিবিপি জখম হয়েছিলেন। 'কানওয়ারিয়ারা ' সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খৈলামের মধ্যে দিয়ে মিছিল নিয়ে যেতে জোর করেছিল। এরপরেই সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি কাশগঞ্জের কোতওয়ালি এলাকায় একটি মিছিল ঘিরে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয়রা সেখানে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেইখান দিয়ে অন্য গোষ্ঠীর মিছিলে বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে।
এই সংঘর্ষে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। তিনটি দোকান, দুটি বাস ও একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই সংঘর্ষের ঘটনার পর টানা তিনদিন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল শহর।
এই সংঘর্ষের ঘটনাই বরেলির জেলাশাসকের ফেসবুক পোস্টের লক্ষ্য ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
তাঁর এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ওই মেসেজ শেয়ার করেন। এর পক্ষে ও বিপক্ষে মতামতও জানান অনেকেই। পরে এই পোস্ট সরিয়ে দেওযা হয়।
অন্য একটি ফেসবুক পোস্টে সিংহ প্রশ্ন তোলেন, 'চিনের বিরুদ্ধে কেন স্লোগান দেওয়া হয় না? তারা তো পাকিস্তানের থেকেও আমাদের বড় শত্রু'।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিংহ বলেছেন, দেশপ্রেমের নামে এ ধরনের ঘটনায় তিনি খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। তিনি আরও বলেন, কোনও বিশেষ গোষ্ঠীর ভাবাবেগে আঘাত দেওযার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। এ ধরনের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। প্রশাসন ও পুলিশ তো বটেই স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। পারস্পরিক সৌহার্দ্যের মাধ্যমেই শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় থাকে।