নয়াদিল্লিসেনা মোতায়েন বিতর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিল বিজেপি। সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এহেন অভিযোগে সারা বিশ্বে বাঙালিদের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। আবার, মমতার অভিযোগকে সবচেয়ে নিম্নমানের বলে কটাক্ষ করলেন সিদ্ধার্থ নাথ সিংহ।


মমতার ‘অভ্যুত্থান’ অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শুক্রবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে একহাত নেন। জানান, এসব করে নিজের দলকে জাতীয় দল হিসেবে উন্নীত করার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। বাবুল বলেন, সব বাঙালির মাথা হেঁট হয়ে গেল। এমন একটা সময়ে যখন সেনা আমাদের জন্য প্রতিদিন লড়াই চালাচ্ছে, তিনি অভিযোগ করছেন তারা (সেনা) না কি ট্রাক থেকে টাকা আদায় করছে।


এদিন সংসদের বাইরে বাবুল বলেন, আমি ভীষণ হতাশ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই ধরনের  মন্তব্য আসায় আমার মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। তাও আবার একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি যোগ করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে তাকান। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের মাথা লজ্জায় নত হয়েছে। রাজনীতি আর কত নিচে নামতে পারে বলেও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।


শুধু সেনা অভ্যুত্থান নয়, তার আগে বিমান অবতরণ বিভ্রাট নিয়েও মমতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি আসানসোলের সাংসদ। বলেন, আমরা সকলেই বিমানে যাতায়াত করি। আমরা জানি, বহুক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা বেশি থাকায় অবতরণের ক্ষেত্রে বিলম্ব হয়েই থাকে।


তিনি যোগ করেন, তাহলে কোনও একদিন ৫০ জন বিজেপি সাংসদ একটা ফ্লাইটে যাবেন, তারপর বলবেন লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা খতম করার জন্য চক্রান্ত হচ্ছে! তাঁর মতে, সবকিছুর একটা যুক্তি থাকা উচিত। নোট বাতিল নিয়েও মমতাকে আক্রমণ করেন বাবুল বলেন, উনি সংসদে এই ইস্যুতে বিতর্ক-আলোচনাকে এড়িয়ে চলছেন।


শুধু বাবুল নন, সেনা মোতায়েন বিতর্কে মমতাকে আক্রমণ করেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সিদ্ধার্থ নাথ সিংহও। জানান, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ‘সবচেয়ে নিম্নমানের’। তাঁর কটাক্ষ, নোট বাতিলের পর থেকে তিনি সব বিষয়ে এখন ‘অলীক কল্পনা’ করছেন।


শুক্রবার সিদ্ধার্থ নাথ সিংহ জানান, কোনও সুস্থ রাজনীতিবিদ এবং সর্বোপরি প্রশাসনিক প্রধান অতীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ আনেননি। একটা রুটিন প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে। মমতার এহেন আচরণ তাঁর চরিত্রের সঙ্গে মানানসই নয়।


সিদ্ধার্থর কটাক্ষ, নোট বাতিলের ফলে তিনি (মমতা) ঘাবড়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, কারণটা সহজ—এর ফলে তিনি বহু কোটি টাকা খুইয়ছেন, যা তিনি বিভিন্ন বেআইনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং তৃণমূল পরিচালিত ‘সিন্ডিকেট-রাজের’ মাধ্যমে আয় করেছিলেন। এখন নোট বাতিলের ফলে সেগুলি অচল হয়ে গিয়েছে।


সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি জানান, মমতা এখন ‘অলীক কল্পনা’ করছেন। তিন বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে সেনাকে প্রমাণ প্রকাশ করতে হল যে তারা রাজ্য প্রশাসনকে আগে থেকে জানিয়েছিল। মমতার ‘সেনা অভ্যুত্থান’ অভিযোগ এদিন খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি। সিদ্ধার্থ বলেন, মমতা যদি দেশে নোট-বাতিল বিরোধী মুখ হতে চান, তাঁকে স্বাগত। কিন্তু, সেনাকে অভিযুক্ত করাটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।


সিদ্ধার্থর খোঁচা, ‘এটা মমতার সবচেয়ে নিম্নমানের অভিযোগ। এর জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ নোট বাতিলকে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা বলে উল্লেখ করার জন্যও এদিন মমতাকে আক্রমণ করেন সিদ্ধার্থনাথ। বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ওনার হয়ত চিকিৎসার প্রয়োজন।’