নয়াদিল্লি:বামপন্থী দল ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে ভারত ধর্মঘটের প্রভাব পড়ল দিল্লি, মুম্বই ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, অসম, কেরল ও ওড়িশার মতো রাজ্যে।  কাজকর্মে প্রভাব পড়েছে। ধর্মঘটে বিদ্যুত্, যাতায়াত ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। দিল্লি ও মুম্বইতে বেশ কিছু জায়গায় পেট্রোল পাম্পে কর্মচারীরা ধর্মঘট করেন। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানহীনতা, কেন্দ্র সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে ১০ টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এদিন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।






ধর্মঘটের কারণে রাষ্ট্রায়ত্তগুলির ব্যাঙ্কগুলির শাখাগুলিতে নগদ জমা ও টাকা তোলা সহ অন্যান্য পরিষেবায় প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ ব্যাঙ্কই আগে থেকেই ধর্মঘট ও পরিষেবায় এর প্রভাব সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করে দিয়েছিল। এআইবিইএ, এআইবিওএ, বিইএফআই, আইএনবিইএফ, আইএনবিওসি-র মতো ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংগঠনগুলি ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে।




বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে বিদ্যু সংক্রান্ত নিয়মে সংশোধন প্রত্যাহার ও পুরানো পেনশন ব্যবস্থা বহাল ও চুক্তিবদ্ধ কর্মচারীকের নিয়মিত করার দাবি নিয়ে দেশজুড়ে ধর্মঘটের আওতায় উত্তরপ্রদেশের কয়েক হাজার বিদ্যু্ত কর্মী কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। বিদ্যুত বিভাগের কর্মচারীদের রাষ্ট্রীয় সমন্বয় সমিতি ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি অফ ইলেকট্রিসিটি এমপ্লয়িজ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের ডাকে উত্তরপ্রদেশের বিদ্যুত নিগমের কর্মচারী, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র ও ইঞ্জিনিয়াররা কাজে যোগ না দিয়ে তাঁদের দফতরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সভা করেন।

অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শৈলেন্দ্র দুবে বলেছন, উত্তরপ্রদেশের প্রায় ৪৫ হাজার বিদ্যুত্ কর্মী সহ দেশের প্রায় ১৫ লক্ষ বিদ্যুত্ কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ার কাজে যোগ দেননি। তবে জরুরি ক্ষেত্রের কর্মীদের ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের সমস্ত বিদ্যুত্ দফতরের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।

ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে কেরল ও অসমের জনজীবনে। রাস্তাঘাটে যান চলাচল সেভাবে করেনি । বেশিরভাগ বাজার-দোকানও বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে, স্কুল বন্ধ ছিল। কলেজ ও অন্যন্যা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নির্ধারিত সূচী অনুযায়ীই হয়েছে। অসমে ধর্মঘটের সময় সরকারি দফতরে কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য রাজ্য সরকার জেলার শীর্ষ আধিকারিকদের নির্দেশ জারি করে এবং বেতন কাটা ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয়। রাজ্যে অধিকাংশ ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল।



ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে ওড়িশাতেও। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ট্রেন ও বাস পরিষেবায় প্রভাব পড়ে। ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীরা ধর্মঘটের সমর্থনে রেল ও সড়ক অবরোধ করেন। রাজ্যের বেশিরভাগ স্থানে দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বেশ কিছু জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও বন্ধ ছিল, ব্যাঙ্ক পরিষেবাও ব্যাহত হয়।
হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরি পরিষেবাকে ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়।

রাজস্থানেও ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব দেখা দিয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীরা ধর্মঘটে সামিল হওয়ার ধর্মঘটের শুরুর দিকে ব্যাঙ্ক, সড়ক পরিষেবায় আংশিক প্রভাব চোখে পড়ে। ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মহেশ মিশ্র বলেছেন, জয়পুরে এলআইসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনে অংশ নেন ব্যাঙ্ক ও এলআইসি কর্মীরা।
রাজস্থানে সড়ক পরিবহনে সিটু-র সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। রাজস্থান রোডওয়েজ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের মহাসচিব কিষান সিংহ রাঠৌর বলেছেন, সড়ক পরিবহনে সিটুর সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৩ হাজার কর্মী দেশব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন। চুরু, গঙ্গানগর, সিকরে বাস পরিষেবায় প্রভাব পড়ে। যদিও জয়পুরে বাজার খোলা ছিল, গণ পরিবহণে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।

কর্নাটকে ধর্মঘটের প্রভাব চোখে পড়েনি। কর্ণাটক রাজ্য সড়ক পরিবহণ নিগম সহ সরকারি বাস পরিষেবা ও ট্রেন পরিষেবায় কোনও প্রভাব পড়েনি। স্কুল-কলেজ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলা। কৃষিজ বিপণন সমিতির ইয়ার্ডে ধর্মধটের কিছু প্রভাব দেখা গিয়েছে।