পদত্যাগ করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নীতীশ বলেছেন, ‘পদত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। রাজ্যের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিজের বিবেকের কথা শুনে পদত্যাগ করেছি। রাজ্যপাল পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন। তিনি আপাতত আমাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।’
তেজস্বীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগই যে তাঁর পদত্যাগের কারণ, সেটা আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন নীতীশ। তিনি বলেছেন, ‘আমি যখন নোট বাতিল এবং বেনামী সম্পত্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াকে সমর্থন করেছিলাম, তখন কীভাবে তেজস্বীর বিরুদ্ধে বেনামী সম্পত্তির অভিযোগ ওঠার পরেও তাঁকে সমর্থন করব? আমি জানতে চেয়েছিলাম, তাঁকে ফাঁসানোর জন্য কোনও চক্রান্ত হয়েছি কি না বলতে। কিন্তু লালু বা তেজস্বী কোনও জবাব দেননি। তাই আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম। গাঁধীজি বলতেন, পৃথিবীতে সব প্রয়োজন মেটানো যায়। কিন্তু লোভের কোনও শেষ নেই।’
আরজেডি-র সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে নীতীশ বলেছেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে সর্বশক্তি দিয়ে মহাজোট রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে আপস করব না। লালু ও তেজস্বীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমি কাউকে পদত্যাগ করতে বলিনি। শুধু ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। কিন্তু সামান্য ব্যাখ্যাও দেননি তাঁরা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল, কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আমার মনে হয়েছে সরে যাওয়াই একমাত্র সমাধান। আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। আমার পক্ষে এই সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই পদত্যাগ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে লালু ও বিহার কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেতা সি পি জোশীকে জানিয়েছিলাম।’
আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই বিহারে জোট সরকারে ফাটল ধরে। বিভিন্ন মহল থেকে তেজস্বীর পদত্যাগের দাবি ওঠে। কিন্তু তেজস্বী পদত্যাগে রাজি হননি। লালুও জানিয়ে দেন, তাঁর পুত্র পদত্যাগ করবেন না। তেজস্বী দাবি করেন, তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেননি নীতীশ। এ বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরেই জেডিইউ ও আরজেডি-র মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। আজ নীতীশের পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে বিহারে মহাজোট ভেঙে গেল।