নয়াদিল্লি ও পটনা: কিছুদিন আগেই সংগঠনের খোলনলচে বদলের দাবি জানিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখেছিলেন কপিল সিব্বল সহ দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। সেই চিঠি নিয়ে দলের অন্দরে কম জলঘোলা হয়নি। এবার সদ্যসমাপ্ত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে দলের হতাশাজনক ফল নিয়ে মুখ খুললেন সিব্বল। সটান বলে দিলেন, মানুষ আর কংগ্রেসকে কার্যকরী বিকল্প বলে ভাবছেন না। আর দল যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, তার সমাধান করছে না নেতৃত্ব।


সংবাদমাধ্যমকে সিব্বল বলেছেন, কী সমস্যা রয়েছে এবং এর উত্তর কী, তা জানা আছে কংগ্রেসের। কিন্তু তা মেনে নিতে আগ্রহী নয়। এটাই সমস্যার সমাধানের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

সিব্বল বলেছেন, আমদের মধ্যে কেউ কেউ চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, সামনের দিকে তাকিয়ে দলের কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু আমাদের কথা না শুনে  আমাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলা হল। তার ফল তো সবাই দেখতেই পাচ্ছে। দেশের মানুষ, শুধু বিহারেই নয়, যেখানেই উপনির্বাচন হয়েছে, সেখানেই আমাদের কার্যকরী বিকল্প হিসেবে গন্য করছেন না।

সিব্বল বলেছে, আত্মসমীক্ষার সময় চলে গিয়েছে। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য আমাকে বলেছিলেন যে, আশা করব দল আত্মসমীক্ষার পথে হাঁটবে। কিন্তু যদি  গত ছয় বছরে দল আত্মসমীক্ষা না করে থাকে, তাহলে এখন আত্মসমীক্ষা থেকে কী আশা করা যায়। কংগ্রেসের কোথায় ভুল হচ্ছে, তা আমাদের জানা। সংগঠনের দিক থেকে আমরা জানি ভুলটা কোথায়। আমরা সবাই এর উত্তরও জানি। কংগ্রেসও তা জানে। কিন্তু নেতৃত্ব সেই উত্তরের স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়.. তাহলে তো রেখচিত্র এমনিতেই পড়তে থাকবে। কংগ্রেসের সাহসী হয়ে সেগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার সদিচ্ছা দেখাতে হবে।

সিব্বল বলেছেন, ওয়ার্কিং কমিটি মনোনীত সংস্থা হওয়াতেই এই সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটার ক্ষেত্রে দলের অনাগ্রহ রয়েছে।  তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। এমনকি ওয়ার্কিং কমিটির সংবিধানেও কংগ্রেসের সংবিধান ধারা প্রতিফলিত হয়েছে। মনোনীত কোনও সদস্য কোনও প্রশ্ন তুলতে পারবেন, এমন আশা করা সঙ্গত নয়।

এদিকে, বিহারের ফল নিয়ে কংগ্রেসের দিকে সমালোচনার আঙুল তুলেছেন জোটসঙ্গী আরজেডি নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি।  তিনি বলেছেন, বিহারে ৭০ জন প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। তাঁর প্রশ্ন, ৭০ আসনের জন্য কতগুলি সভা করেছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।

শিবানন্দ তিওয়ারির অভিযোগ, যখন বিহারে ভোটের পুরোদস্তুর লড়াই চলছিল, তখন রাহুল সিমলাতে তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কার বাড়িতে পিকনিক করছিলেন।
আরজেডি নেতা আরও বলেছেন, রাহুল ভোটের প্রচারে বিহারে এসেছিলেন। কিন্তু মাত্র তিনদিনের জন্য। প্রতিদিন দুটি করে মিটিং করেছেন। তাঁর থেকে বয়সে অনেক বড় হয়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিদিন চারটি করে মিটিং করেছেন।
প্রিয়ঙ্কাও প্রচারে আসেননি। তাঁর প্রশ্ন, ৭০টি আসনে লড়লেন, কতগুলো সভা করলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা?

তাঁর আরও প্রশ্ন ‘এ ভাবে কি কোনও দল চালানো সম্ভব?’