নয়াদিল্লি: বিজেপি যখন কেরলে গিয়ে বাংলার প্রসঙ্গ তুলে বাম-কংগ্রেস জোটের কথা প্রচার করছে, তখন সেই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাঁতের অভিযোগকে হাতিয়ার করার নতুন সুযোগ পেয়ে গেল সিপিএম-কংগ্রেস। কারণ, ফের সংসদে তৃণমূলের পাশে বিজেপি।

 

বাংলায় দোস্তি, কেরলে কুস্তি, কেরলে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে যখন বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে এভাবেই আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করছে বিজেপি, ঠিক তখনই সংসদে তাদের ও তৃণমূলের যুগলবন্দীর ছবি এ রাজ্যে সিপিএম-কংগ্রেসের হাতে নয়া হাতিয়ার তুলে দিল।

 

পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বাঁধার আগে পর্যন্ত তৃণমূলকে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে কংগ্রেসের সঙ্গে একজোট হয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, এ রাজ্যে জোট হওয়া মাত্র সেই ছবিটা বিলুপ্ত। এখন সংসদে বারবার ধরা পড়ছে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের অঘোষিত সমন্বয়ের ছবি। তৃণমূল সাংসদ যখন ঘুরিয়ে গাঁধী পরিবারকেও আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না, তখন তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিজেপি। কখনও অরুণ জেটলি, কখনও মুক্তার আব্বাস নকভির মতো হেভিওয়েট মন্ত্রীদের সংসদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের পক্ষে কার্যত সওয়াল করতে। সোমবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি।

 

আর এই ছবিই কংগ্রেস-সিপিএমের হাতে নয়া হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। তাদের দাবি, মোদি-মমতা গোপন আঁতাঁতই এখন প্রকাশ্যে চলে আসছে। আজ থেকে দু’বছর আগেই সারদা কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সেই তদন্ত এখন প্রায় হিমঘরে। বড় চাঁইদের আর গ্রেফতারি হচ্ছে না। নারদকাণ্ডেরও তদন্ত রাজ্যসভার এথিকস কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের হরিশ রাওয়াতের স্টিং ফুটেজের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফরেন্সিক পরীক্ষা হলেও, আজ পর্যন্ত নারদের ফুটেজের কোনও পরীক্ষা করায়নি মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আর এসবের মধ্যেই বারবার সংসদের ভিতরে তৃণমূল-বিজেপির পাশে দাঁড়ানোর ছবি।

 

সিপিএম-কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি এবং তৃণমূল, দুই দলেরই আসলে দু’জনকে প্রয়োজন। সংসদে বিভিন্ন বিল পাস করাতে তৃণমূলকে পাশে চায় বিজেপি। আবার, সারদা থেকে নারদের মতো দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে যাতে তাদের বিপাকে পড়তে না হয়, সে কারণেই বিজেপির প্রতি নরম তৃণমূল।