নয়াদিল্লি: মায়াবতীকে কুকথা বলে বিপাকে বিজেপির উত্তর প্রদেশ শাখার সহ সভাপতি দয়াশঙ্কর সিংহ। বিএসপি-তে ভোটের টিকিট বিলির সময় মায়াবতী যৌনকর্মীর চেয়েও খারাপ আচরণ করেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। দয়াশঙ্করের এমন মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সংসদে তুমুল শোরগোল হয়। চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চান দয়াশঙ্কর। বিজেপি-র শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও দলীয় নেতার মায়াবতী সম্পর্কে যৌনগন্ধী মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। শেষ পর্যন্ত দয়াশঙ্করকে বিজেপি বরখাস্ত করেছে।
এদিন সাংবাদিকদের দয়াশঙ্কর বলেন, মায়াবতী কাঁসিরামের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন। যেভাবে উনি টাকা-পয়সার বিনিময়ে টিকিট বিতরণ করেন, একজন যৌনকর্মীও তা করেন না। সকালে কেউ ১ কোটি টাকা দিতে চাইলে তাঁকে উনি টিকিট দেন। বিকালে কেউ ৩ কোটি দিলে আগেরজনের নাম বাতিল করে তাঁকেই টিকিট দেন। যৌনকর্মীও এমন করেন না!


 

এজন্য সংসদের দুই কক্ষেই তুমুল নিন্দা, সমালোচনার মুখে পড়েন দয়াশঙ্কর। দলমত নির্বিশেষে সদস্যরা ক্ষোভ জানান। মায়াবতী বলেন, আমি উত্তরপ্রদেশের চারবারের মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভার সদস্যও হয়েছি। কিন্তু কারও সম্পর্কে কোনওদিন একটিও কুরুচিকর শব্দ ব্যবহার করিনি। দয়াশঙ্কর আমাকে নয়, ধুলোয় মিশিয়েছেন তাঁর মা, বোন ও দেশের সব মহিলার সম্মান। ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত, নইলে ওঁর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মানুষ হিংসাত্মক জবাব দিলে সেটা আমার বিবেক সইবে না। দয়াশঙ্করের মন্তব্যের পাশাপাশি গুজরাতের দলিত নিগ্রহের প্রসঙ্গও তোলেন বিএসপি নেত্রী। এসবের জন্য দেশের মানুষ বিজেপিকে ক্ষমা করবে না বলেও মন্তব্য করেন।

বিএসপি নেতা এসপি মিশ্রও দাবি করেন, দয়াশঙ্করকে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের ওপর অত্যাচার বিরোধী আইনে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো দরকার।

তবে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে বিজেপি নেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করে মায়াবতীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। জেটলি বলেন, মায়াবতী সম্পর্কে বিজেপির কেউ এমন অশালীন মন্তব্য করছেন দেখে আমি ব্যক্তিগত ভাবে লজ্জিত। উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সভাপতি কেশব মৌর্যও দয়াশঙ্কর ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। বলেছেন, আমি মনে করি, যা হয়েছে, তা অন্যায়। আমি এজন্য ক্ষমা চাইছি। এমন কথা বলা উচিত নয়। আমরা ওঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছি। না চাইলে ব্যবস্থা নেব।

জেটলি, মৌর্যের কঠোর মনোভাব দেখে শেষ পর্যন্ত মায়াবতী কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন দয়াশঙ্কর। বলেন, মায়াবতীজী বড় নেত্রী। আমি কারও সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারি না। ক্ষমা চাইছি। ওঁর সম্পর্কে এমন ভাবতেই পারি না। অনেক লড়াই, সংগ্রাম করেই উনি উঠে এসেছেন।