নয়াদিল্লি:  মধ্যপ্রদেশের সদ্যসমাপ্ত স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফলে ৪৩ টির মধ্যে ২৫ টিতেই জিতেছে বিজেপি। অন্যদিকে, ১৫ টিতে জিতে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে কংগ্রেস। বেশি আসনে জিতলেও এই ফলাফল আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য ক্ষমতাসীন বিজেপির কাছে সতর্কবার্তা দিয়েছে বলেই অনুমান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের । কারণ, ভোটের ফলাফলে সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনার প্রভাব পড়েছে। আন্দোলনের মূল কেন্দ্র মন্দসৌরের তিনটি আসনেই কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি যে কংগ্রেসের কাছে জমি হারাচ্ছে, তা এই ভোটের ফলাফল থেকে স্পষ্ট।

গত জুলাইতে কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির দাবিতে কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। কিন্তু সেই আন্দোলন ক্রমেই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মন্দসৌরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ছয় কৃষকের।

যে ৪৩ টি সংস্থায় গত ১১ আগস্ট ভোট হয় তারমধ্যে কংগ্রেস ১৫ টিতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। এক্ষেত্রে বিরোধীদলের আসন সংখ্যা পাঁচটি বেড়েছে। গতবার ২৯ টি জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এবার তাদের হাতছাড়া হয়েছে চারটি।

মান্দসৌর জেলার শামগড় পঞ্চায়েতের দুটি ওয়ার্ড এবং গারোথ পঞ্চায়েতের একটি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের কাছে পরাজয় বিজেপির কাছে উদ্বেগের বিষয়।

মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান অবশ্য দাবি করেছেন, যে মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।

অন্যদিকে, কংগ্রেসের দাবি, মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেস কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সংসদীয় আসন বিদিশার অন্তর্গত নাসরুল্লাগঞ্জ শহরে বিজেপিকে হারিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস আরও বলেছে, রাজ্য বিজেপি সভাপতির সংসদীয় আসন এলাকার অন্তর্গত সানাওয়াড়ে তারা জয়ী হয়েছে।

কংগ্রেসের আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যে ৩১ টি স্থানীয় সংস্থায় প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তারমধ্যে ১৩ টিতে জয়ী হয়েছে তারা।

মধ্যপ্রদেশে ২০০৩ থেকে টানা ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এরফলে প্রতিষ্ঠানবিরোধী মনোভাবের সঙ্গেও যুঝতে হচ্ছে বিজেপিকে। ব্যপম কেলেঙ্কারি, কৃষকদের বিক্ষোভ শিবরাজ সরকারকে ফাঁপরে ফেলেছে। বিজেপির অন্দরেও শিবরাজকে সরানোর দাবি গত কয়েকমাসে জোরাল হয়েছে।

এই অবস্থায় কংগ্রেস নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছে। হাইকমান্ডের স্পষ্ট নির্দেশ, শীর্ষ নেতাদের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে যাতে দলকে মূল্য চোকাতে না হয়।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ন ও দুর্বল কংগ্রেস বিজেপির সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারণ। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশ আরএএসের শক্তঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত। আরএসএসের সমর্থকভিত্তি বিজেপির অন্যতম শক্তি।

মধ্যপ্রদেশে দলকে শক্তিশালী করার জন্য রাজ্যের দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগামী ১৮ আগস্ট মধ্যপ্রদেশে আসছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।