বুলন্দশহর: তাঁর স্বামী মহম্মদ আখলাক খুনের তদন্ত করেছিলেন। সে জন্যই ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মারা হয়েছে। এ জন্য হুমকিও পেতেন তিনি। অভিযোগ করলেন বুলন্দশহরে গতকাল গোরক্ষকদের তাণ্ডবে মৃত পুলিশ অফিসার সুবোধ কুমার সিংহের স্ত্রী রজনী সিংহ। এই ‘ষড়যন্ত্রে’ যারা যুক্ত, তাদের নাম প্রকাশের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

রজনীর বক্তব্য, দাদরির আখলাক খুনের ঘটনার তদন্তের সময় তাঁদের বহুবার হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, তাঁর স্বামীর মৃত্যু পূর্বপরিকল্পিত খুন ছাড়া কিছু নয়। তাঁর সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল তিনি এখনও জানেন না, কেউ বলছে, পাথরের আঘাতে তিনি মারা গিয়েছেন, কেউ বলছে, গুলি করা হয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে যেতে বলা হয়, তখনই তাঁরা জানতেন, কোনও আশা নেই। তিনি আরও বলেছেন, যদি পুলিশ অপরাধীদের বাঁচাতে চেষ্টা করে, তবে এটাই ধরে নিতে হবে যে তারা চায়, তিনি আত্মহত্যা করুন।

রজনী বলেছেন, আখলাক হত্যার সময় তাঁরা এত হুমকি পেতেন, যে ভয়ে দিনের পর দিন বাড়ি থেকে বার হননি। এমনকী বাজার থেকে শাকসব্জি কিনতেও যেতে পারতেন না। ছেলেমেয়েদের বেসরকারি গাড়িতে স্কুলে পাঠাতে হত, তিনি নিজে কখনও বাড়ি থেকে বার হতেন না। আজ এইভাবে তাঁর স্বামীর মৃত্যু স্রেফ ষড়যন্ত্রপ্রসূত বলে তাঁর দাবি।

মৃত অফিসারের স্ত্রী বলেছেন, তাঁর স্বামী আপাদমস্তক সৎ ছিলেন, সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতেন। এই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি দুবার গুলিতে আহত হন কিন্তু তখনও কোনও বিচার মেলেনি। যদি তাঁর হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়, একমাত্র তাহলেই ন্যায় বিচার হবে।

একই অভিযোগ করেছেন সুবোধের বোনও। তাঁর আরও দাবি, গতকালের গোটা হিংসাই ঘটে তাঁর ভাইকে খুনের উদ্দেশে, এতে পুলিশও যুক্ত। তাঁর বক্তব্য, ক্ষতিপূরণ নয়, তাঁর ভাইকে শহিদ ঘোষণা করা হোক, স্মারকস্তম্ভ গড়ে তোলা হোক তাঁর স্মৃতিতে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতি তাঁর মন্তব্য, আমিও মানি, গরু আমাদের মা। আমার ভাই তাকে বাঁচাতে জীবন দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সারাদিন গরু, গরু করেন, তিনি কেন গোরক্ষা করতে যেতে পারেন না? প্রশ্ন মৃত অফিসারের বোনের।