নয়াদিল্লি: তারে আমি চোখে দেখিনি, তার অনেক গল্প শুনেছি। রবিনহুডের কথাই বলছি, ধনীদের ডাকাতি করে সব লুটে নিয়ে যে গরিবকে বিলিয়ে দিত! রবিনহুডকে কেউই দেখিনি আমরা, গল্পের বইয়ে তার কাহিনি পড়েছি।  কিন্তু এবার গল্পের বই থেকে বাস্তবের মাটিতে রবিনহুড নেমে এল বুঝি! আজকের রবিনহুড খ্যাতি পাওয়া ৩০ বছরের যুবকের আসল নাম মহম্মদ ইরফান। দিল্লি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। ইরফান ওরফে রবিনহুড উজালেকে বিহার থেকে পাকড়াও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি দামী গাড়ি, একটি জাগুয়ার এক্সজেএল, একটি নিশান তিয়ানা। লুঠের টাকায় সেগুলি কেনা বলে দাবি পুলিশের।  পঞ্জাব থেকে ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে রবিনহুডের তিন সহযোগীও।


ডিসিপি (ক্রাইম ব্রাঞ্চ) মনিকা ভরদ্বাজ ইরফান, তার দলবল দিল্লি, পঞ্জাব, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বাড়িগুলি টার্গেট করত বলে জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, জাগুয়ারটি ব্যবহার করা পুরানো গাড়ির এক ডিলারকে বেচেছিলেন এক প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী। ডিলারের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকায় সেটি কেনে ইরফান, নিশানটি সে কেনে ১০ লাখে। লুঠ করা টাকায় সম্প্রতি সে একটি ব্যবহার করা মাহিন্দ্রা স্করপিওও কিনেছিল বলে দাবি পুলিশের। তার সর্বশেষ অপরাধ পঞ্জাবের জলন্ধরের একটি বাড়িতে ডাকাতি করে ২৬ লাখ টাকা নগদ, সোনা-দানা, হিরে-জহরত লুঠ করা।


যদিও বিহারের সীতামারিতে নিজের তল্লাটে তার দানধ্য়ানের জন্য বিরাট খ্যাতি ছিল। ডিসিপি জানিয়েছেন, সেখানকার গরিবদের জন্য স্বাস্থ্য, খাবার বিলির শিবিরের আয়োজন করে তাদের কাছে সে রীতিমতো ভগবানের স্ট্য়াটাস পেত। ডিসিপি বলেছেন, নিজের জনপ্রিয়তা পরখ করে স্থানীয় যুবকদের পীড়াপীড়িতে চলতি বছরের মার্চে সীতামারিতে স্থানীয় জেলা পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথা ভাবছিল।


দিল্লি পুলিশের হাতে আগেও সে গ্রেফতার হয়েছে। ২০১৭-য় সে ধরা পড়ার পর তদন্তকারীরা জানান, সে এক গরিব পরিবারের মেয়ের বিয়ের জন্য় ৫ লাখ টাকা ডোনেশন দেওয়া থেকে অনেক দানধ্যান করেছে। ডিসিপি বলেছেন,  রাজ্যে রাজ্যে ওর গ্যাংয়ের লোকজন ছড়িয়ে থাকত। তারা ডোনেশন সংগ্রহের নামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বারবার দরজায় বাড়ি মেরে বুঝে নিত, ভিতরে কেউ আছে কিনা।  বাড়িতে কেউ নেই, নিশ্চিত হয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দামী সামগ্রী লুঠ করে চলে যেত।