নয়াদিল্লি: ১০ দিন ধরে দিল্লির যন্তর মন্তর রোডে চলছে তামিলনাড়ুর কৃষকদের বিক্ষোভ। তাঁদের দাবি, ঋণের জ্বালায় নাভিশ্বাস উঠেছে, এখনই সেই ঋণ মকুব করে ৪০,০০০ কোটি টাকার খরা ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। তা নাহলে ৪ লাখ চাষী এ বছর আত্মহত্যা করবেন।

এই কৃষকদের বেশিরভাগেরই খালি গা, পরনে সবুজ ধুতি, আর হাতে মড়ার খুলি। তাঁদের দাবি, এই সব খুলি আত্মহত্যা করা চাষীদের। গত ৬ মাসে প্রায় ৪০০ চাষী তামিলনাড়ুতে আত্মহত্যা করেছেন। মাটি খুঁড়ে তাঁদের খুলি বার করেছেন এই কৃষকরা। সব খুলি আবার ভাল করে পোড়েনি। এই খুলি সামনে রেখে তাঁরা কেন্দ্রকে বোঝাতে চান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাঁদের ঋণ মকুব না করা হলে তাঁদেরও এই পথে হাঁটতে হবে।

কৃষকদের বক্তব্য, তামিলনাড়ুতে ভয়াবহ খরা চলছে, গত ১৪০ বছরে এমন খরা কখনও হয়নি। তাই সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া তাঁদের যাবতীয় ঋণ মাফ করতে হবে।

খরার যা পরিস্থিতি, তাতে ত্রাণ হিসেবে ৪০,০০০ কোটিম টাকার প্যাকেজ চাই।

নদী সংযুক্তিকরণ ঘটাতে হবে, যাতে কাবেরী নদীর জল পেতে পারেন তামিল চাষীরা। কারণ তামিলনাড়ুতে আসার আগেই কাবেরীর জল কার্যত শুকিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া শস্যের জন্য সর্বাধিক দাম দিতে হবে তাঁদের।

যদি এই সব দাবি না মানা হয়, তবে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

জানুয়ারি মাসে তামিলনাড়ু সরকার আত্মঘাতী ১৭ জন চাষীর পরিবার পিছু ৩ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের মতে, সে টাকা খুবই সামান্য। তাঁদের কথায়, মুখে বারবার বলা হয় ঠিকই, যে তাঁরাই দেশের মেরৃদণ্ড কিন্তু কাজে করা হয় ঠিক উল্টো। তাঁদের দুঃখ, যন্ত্রণার দিকে সরকারের খেয়ালই নেই।

বিক্ষোভকারীরা দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতীর সঙ্গে। তাঁদের অভিযোগ, তাতে সদর্থক কিছু হয়নি। তবে অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁদের বিষয়টি নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কৃষকরা জানাচ্ছেন, যতদিন না সরকার তাঁদের কথা শুনছে আর লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, ততদিন বাড়ি ফিরবেন না তাঁরা। বাড়িতে মৃত্যু অপেক্ষা করছে। তার থেকে রাজধানীর বুকে দাঁড়িয়ে শেষ লড়াই করা ভাল।