নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশের মিরাটে রবিবার থেকে বসেছে এক মহাযজ্ঞ। ৯ দিন ধরে চলবে ধুমধাম, মহা-আড়ম্বর। বারাণসীর প্রায় সাড়ে তিনশো সাধুর জমায়েত হয়েছে সেখানে। মহাযজ্ঞের কারণ শুনলে আপনি চমকে উঠবেন। বায়ূদূষণ মোকাবিলাই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু কীভাবে? ৬০০০ কেজি চাল, ২৫০০ কেজি গুড়, ৫১টিন দেশী ঘি, ১২০০০ কেজি তিল ঢালা হবে, চলবে মন্ত্রপাঠ। তিনটি ঘুঁটে ভর্তি ট্রলিও এসেছে। কিন্তু আঁতকে ওঠার মতো ব্যাপার হল, এর পাশাপাশি সেখানে পোড়ানো হবে ৫০,০০০ কেজি আমকাঠও!

মহাযজ্ঞের আয়োজক শ্রী অচ্যুতান্ডি মহাযজ্ঞ সমিতি। তারা দূষণ কমিয়ে বায়ু শুদ্ধ করতে চায় বলে জানিয়েছে। কিন্তু এমন বিপুল পরিমাণ কাঠ পুড়িয়ে বায়ু শুদ্ধকরণ!

সমিতির সহ সভাপতি গিরীশ বনশলের দাবি, হভন বা যজ্ঞ করলে আমাদের চারপাশের বায়ূ শুদ্ধ হয়ে ওঠে। তাঁকে উদ্ধৃত করে একটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, আমাদের ধর্মীয় পুঁথিতেই আছে, হভন বায়ু শুদ্ধ করতে সাহায্য করে, মহাযজ্ঞ করে গেলে বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পায়। আমরা মানবসমাজ, গাছপালা, পরিবেশ, ফুলফলের সুরক্ষায় আমাদের সামান্য দায়িত্ব পালন করছি মাত্র।
তিনি আরও বলেন, গত অক্টোবরেই এই কর্মসূচি ঠিক হয়। ইন্টারনেটে নাসার রিপোর্ট পড়ে দেখুন। তাতে বলা হয়েছে, ভারতের ওপরের ওজোনের স্তর সবচেয়ে ভাল। তাকে রক্ষা করা দরকার। সে ব্যাপারে এই মহাযজ্ঞ সাহায্য করবে।
এক সাধুর সাফাই, এ তো আর কারখানার ধোঁয়া নয়, হভনের ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হয় না তাতে ব্যবহৃত সামগ্রীর জন্য। একেবারে খাঁটি ধোঁয়া। কার্নালের দেশী গাইয়ের দুধ থেকে তৈরি ঘি এসেছে। এই শুদ্ধতা হভনে উচ্চারিত মন্ত্রের জন্যও।
যদিও উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড বলেছে, এই মহাযজ্ঞে দূষণ আরও বাড়বে। তবে তারা হস্তক্ষেপে রাজি নয়। বোর্ডের কর্তা আর কে ত্যাগী বলেছেন, এত বিপুল পরিমাণ কাঠ পোড়ালে দূষণ তো হবেই। কিন্তু এমন কোনও পলিসি নেই যাতে এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যায়। ফলে আমাদের বিশেষ কিছু করারও নেই।