নয়াদিল্লি: দেশের নগদ আকালের পরিস্থিতিকে দ্রুততার সঙ্গে মোকাবিলা করা হচ্ছে। তাঁর আশা, খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সংসদীয় কমিটির সামনে এমনটাই জানালেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল।


শুক্রবার, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-র সামনে হাজিরা দেন উর্জিত। অবধারিতভাবে তাঁকে দেশের নোট পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে, আরবিআই গভর্নর জানান, মোটের ওপর পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই উন্নত।


উর্জিতের দাবি, শহরাঞ্চলে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। যদিও, তিনি স্বীকার করে নেন, প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এখনও নগদ সমস্যা রয়ে গিয়েছে। তিনি আশ্বাস দেন, আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতিকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে।


এর পাশাপাশি, দেশের অর্থনীতির ওপর নোট বাতিলের প্রভাব নিয়েও উর্জিতকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি জানান, স্বল্পমেয়াদে আর্থিক বৃদ্ধির হার প্রভাবিত হলেও, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে অর্থনীতি লাভবান হবে বলে দাবি করেন তিনি।


এদিন প্যানেলের সামনে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রসঙ্গেও নিজেদের মতামত দেন করেন উর্জিত। তিনি বলেন, নগদহীন লেনদেনকে আরও উৎসাহ প্রদান করতে এই সংক্রান্ত চার্জ কমানোর ভাবনাচিন্তা চালাচ্ছে।


কেন্দ্রের নোট বাতিলের প্রক্রিয়া কবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানতে পেরেছে, সেই প্রশ্নে, উর্জিত জানান, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের আলোচনা ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই দুপক্ষের মধ্যে চলছিল। উর্জিতের দাবি, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আগে থেকেই জানত আরবিআই।


তবে, সূত্রের খবর, এদিন ই-ওয়ালেট নিয়ে সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন উর্জিত। এই প্রসঙ্গে কমিটিকে উর্জিত জানান, তিনি মনে করেন, ই-ওয়ালেটের প্রচার আরও ৬ মাস আগে থেকে হওয়া উচিত ছিল। তা হলে মানুষের দুর্ভোগ কম হত।


গত সপ্তাহে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি (ফিন্যান্স)-এর সামনে হাজিরা দিয়ে উর্জিত দাবি করেছিলেন, নোট বাতিলের পর দেশের বাজারে প্রায় ৯. লক্ষ কোটি টাকা ঢুকিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।


এদিন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য সরাসরি জবাব এড়িয়ে যান উর্জিত। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পাঁচশো এবং দু হাজারের কত নতুন নোট ছাপা হয়েছে? পাঁচশো ও এক হাজারের কত অচল নোট জমা পড়েছে? জবাব তিনি শুধু বলেন, হিসেব চলছে।


পাশাপাশি, নোট-বাতিলের পর সমবায় ব্যাঙ্কে অনিয়ম হয়েছে বলেও দাবি তুলে উর্জিতের সামনে প্রশ্ন রাখেন কমিটির এক সদস্য। বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের সর্বময় কর্তা। জানান, এই বিষয়ে তদন্ত করছে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-ইন্ডিয়া।


বৈঠকের পর পিএসি-র চেয়ারম্যান কে ভি থমাস সাংবাদিকদের জানান, উর্জিতদের সামনে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। এদিন সেগুলির সদুত্তর মেলেনি। জবাব দাখিলের জন্য ১৫ দিন সময় চেয়েছেন আরবিআই গভর্নর। তা মঞ্জুর করা হয়েছে। তিনি যোগ করেন, কমিটি ফের ১০ ফেব্রুয়ারি মিলিত হবে। সেদিন প্রয়োজনে ফের আরবিআই গভর্নরকে তলব করা হবে।