নাজিব নিঁখোজ মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ, স্বাগত জানালেও সংশয়ী জেএনইউ-র পড়ুয়ারা
ABP Ananda, web desk | 16 May 2017 07:59 PM (IST)
নয়াদিল্লি: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ছাত্র নাজিব আহমেদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। গত অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র কয়েকজন সদস্যর সঙ্গে বচসার পরের দিন নিখোঁজ হয়ে যান নাজিব। যদিও এবিভিপি নাজিবের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে তাদের হাত থাকার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। নিখোঁজ রহস্যের তদন্তে নেমে কোনও সাফল্য পায়নি দিল্লি পুলিশ। শেষপর্যন্ত নিখোঁজ ছাত্রের মা হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান। এদিন বিচারপতি জি এস সিস্তানি ও বিচারপতি রেখা পাল্লির বেঞ্চ তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। অবিলম্বে এই নির্দেশ কার্যকর হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ডিআইজি পর্যায়ের আধিকারিক সিবিআইয়ের তদন্তের তত্ত্বাবধান করবেন। আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৭ জুলাই। এদিকে, জেএনইউ-র ছাত্ররা হাইকোর্টের এই নির্দেশে খুশি হলেও সিবিআই কতটা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি মোহিত পান্ডে বলেছেন, এটা ভালো সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা আদালতের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে সিবিআই। কাজেই এই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত প্রভাবিত করা যায়, যেমনটা বহু মামলাতেই আমরা দেখতে পেয়েছি। ছাত্র সংদদের প্রাক্তন সহ সভাপতি শেহলা রশিদ বলেছেন, হাইকোর্টের এই রায়ে প্রমাণ হল যে, দিল্লি পুলিশ তাদের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খুবই ইতিবাচক। কিন্তু প্রশ্ন হল, সিবিআইকে কি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেবে কেন্দ্র। রশিদ বলেছেন, এক্ষেত্রে আদালত নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল হলে ভালো হত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আয়েশা কিদওয়াই বলেছেন, নাজিবের খোঁজ পেতে যে তত্পরতা দেখানোর প্রয়োজন ছিল, তা দেখা যায়নি পুলিশ ও জেএনইউ কর্তৃপক্ষের। তাঁর আশা সিবিআই আন্তরিকতার সঙ্গে নাজিবের খোঁজে তল্লাশি চালাবে। এবিভিপি নেতা সৌরভ শর্মাও আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আশা করা হচ্ছে যে সিবিআই নাজিবকে খুঁজে বের করবে এবং জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএসের সঙ্গে তার যোগ প্রকাশ্যে আনবে। দিল্লি পুলিশ আইসের সঙ্গে নাজিবের যোগ লুকিয়ে রেখেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, সাত মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন নাজিব। এই মামলায় পুলিশি তদন্তের পদ্ধতির একাধিকবার সমালোচনা করেছিল হাইকোর্ট। এর আগে হাইকোর্ট বলেছিল, পুলিশ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিঁখোজ ছাত্রের খোঁজে লোক পাঠাচ্ছে। বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করছে। কিন্তু নাজিবের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে যে নয় ছাত্রের ভূমিকা থাকার সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি, হেফাজতেও নেওয়া হয়নি। এদিন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালত অবশ্য বলেছে, দিল্লি পুলিশ তাদের দেওয়া সমস্ত প্রস্তাব ও নির্দেশ পালন করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকেই সিবিআই তদন্তের আর্জির বিরোধিতা করা হয়নি।