নয়াদিল্লি: দার্জিলিঙে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে চলা বিবাদের মধ্যেই সব রাজ্যের উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র জানিয়ে দিল, আধাসামকির বাহিনীকে কোনওভাবেই রাজ্য পুলিশের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র, জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে।


এদিন রাজ্যগুলিকে পাঠানো এক নির্দেশিকায় সংশ্লিষ্ট সরকারকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশও দিয়েছে কেন্দ্র। ওই কমিটি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, গোয়েন্দা তথ্য এবং নিকটবর্তী অঞ্চলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেবে।


নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও শর্তাবলী তৈরি করেছে কেন্দ্র। সেই অনুযায়ী, সীমান্তে নিরাপত্তা প্রদান, অনুপ্রবেশ রোখা, রাষ্ট্র-বিরোধী অভিযানদমন সহ বিভিন্ন অতি-গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে বাহিনী যাতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং তাদের দ্রুততার সঙ্গে মোতায়েন করা যায়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে।


নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়, রাজ্যের জরুরি অবস্থার সময় সেখানে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী কখনই রাজ্য পুলিশ বাহিনীর বিকল্প হতে পারে না।


প্রসঙ্গত, দার্জিলিঙে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খায় কেন্দ্র। পাহাড় থেকে ৭ কোম্পানি (প্রায় ৭০০ জন জওয়ান) বাহিনী প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মঙ্গলবার, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করে উচ্চ আদালত। এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে বাহিনী প্রত্যাহার না করার অনুরোধও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলে সূত্রের খবর।


এদিন নির্দেশিকায় কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্য সরকারগুলি এমন পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে অনুরোধ করে যার মোকাবিলা সাধারণত রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষেও সম্ভব। পাশাপাশি, একবার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হল, রাজ্যগুলি তাদের প্রত্যাহার করার পক্ষপাতী হয় না। যথাযথ কারণ ছাড়াই বাহিনী মোতায়েনের মেয়াদবৃদ্ধির আর্জি করে।


আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করার একটা নির্দিষ্ট খরচ হয়। যে রাজ্যে বাহিনী মোতায়েন হচ্ছে, খরচ সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেই বহন করতে হয়। কেন্দ্রের অভিযোগ, বহুক্ষেত্রেই, এই খরচ দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থেকে যায়। যা হওয়া উচিত নয়।