নয়াদিল্লি: পশু বাজারে জবাইয়ের জন্য গবাদি পশু বেচাকেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বিভিন্ন রাজ্য ও সংগঠনের তরফে যে উদ্বেগ ও আপত্তি তোলা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। এমনটাই জানালেন বেঙ্কাইয়া নাইডু।


গত শুক্রবার, এক নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র ঘোষণা করে— পশু বাজারে ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, সেখানে গবাদি পশুর বেচাকেনা কেবলমাত্র কৃষিস্বার্থেই করা হচ্ছে। কেন্দ্রের এই নির্দেশিকার ঘোরতর বিরুদ্ধাচরণ করে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অরুণাচল প্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্য।


এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, পশুদের ওপর অত্যাচার রুখতে সুপ্রিম কোর্ট ও সংসদের স্থায়ী কমিটির কিছু পর্যবেক্ষণ এবং গবাদি-পাচার সহ পশু-বাজারে অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতেই কেন্দ্র এই নির্দেশিকা জারি করে। যদিও, তিনি যোগ করেন, এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করেছে বেশ কিছু রাজ্য ও ব্যবসায়িক সংগঠন। কেন্দ্র তাদের অভিযোগ-অনুযোগ খতিয়ে দেখছে।


গতকালই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশিকাকে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক উল্লেখ করে তাকে আইনি পথে মোকাবিলা করারও হুঁশিয়ারি দেন। তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য এই নির্দেশিকা মানবে না।


একইভাবে, দলমতনির্বিশেষে এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় কেরলও। মূলত, গো-মাংসের বিপুল চাহিদা রয়েছে কেরলে। ফলে, এই নির্দেশিকায় রাজ্যের মানুষের খাদ্যাভ্যাস জোর করে বদলে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে দাবি করে, কেন্দ্রের নির্দেশিকার বিরোধিতা করে শাসক ও বিরোধী দল।


একইভাবে, বিরোধিতা আসতে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য থেকেও। কারণ, সেখানে মানুষের স্বাভাবিক পছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য খাদ্যতালিকায় রয়েছে গো-মাংস।


শুধু রাজ্যগুলিই নয়, আপত্তি তোলা হয়েছে চর্ম ও মাংস ব্যবসায়ীদের তরফেও। তাদের দাবি, গবাদি পশু নিধন না হলে, দেশে যেমন চামড়ার ব্যবসা ও রফতানি পুরোপুরি বসে যাবে, তেমনই আবার গো-মাংসের আকাল দেখা দেবে।


ফলে, সব মিলিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকেই এই নিয়ে বিরোধী আক্রমণের মুখে বেশ বিপাকে পড়ে কেন্দ্র। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকে যেভাবে একের পর এক মহল থেকে এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করা হচ্ছে, তাতে আখেরে দল তথা সরকারের কাছে বড় ধাক্কা।


তাদের মতে, প্রবল বিরোধিতার জেরে কিছুটা হলেও পিছু হঠল মোদী সরকার। ঘটনাচক্রে আজই কেন্দ্রের নির্দেশিকার ওপর চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্টের মদুরাই বেঞ্চ।