নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে আরও বাহিনী পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদ দমন অভিযান জোরদার করতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অবিলম্বে সেখানে ১০ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান পাঠানোর নির্দেশ দিল কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সন্ত্রাসকবলিত উপত্যকায় ২৫ জুলাই ‘জরুরি’ ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) ১০০ কোম্পানি জওয়ান মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে। আরও ১০০ কোম্পানি সেখানে পাঠানো হতে পারে বলে খবর। একটি সিএপিএফ কোম্পানিতে ১০০ জন করে জওয়ান থাকে।
সূত্রটি বলেছে, সর্বশেষ ইউনিটগুলিতে সিআরপিএফ থেকে ৫০ কোম্পানি, ৩০ কোম্পানি সীমা সুরক্ষা বল (এসএসবি), ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) ও বিএসএফ থেকে ১০ কোম্পানি করে বাহিনী যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে এই জওয়ানদের সন্ত্রাসদমন অভিযানে তীব্রতা বাড়াতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জওয়ানদের আকাশপথে উড়িয়ে, ট্রেনে-দুভাবেই পাঠানো হচ্ছে বলে খবর।
সূত্রটি বলেছে, উপত্যকায় ইতিমধ্যেই মোতায়েন থাকা যে নিরাপত্তাবাহিনী বার্ষিক অমরনাথ যাত্রার নিরাপত্তা সামলাচ্ছে, প্রতিদিন সন্ত্রাসবাদ দমন কর্মসূচি পালন করছে, তাদের শক্তি বাড়াতেই অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অমরনাথ তীর্থযাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে উপত্যকায় আগে থেকেই রয়েছে সিআরপিএফের প্রায় ৬৫টি নিয়মিত ব্যাটালিয়ন, অন্যান্য বাহিনীর ২০-র বেশি ব্যাটালিয়ন। অতিরিক্ত হিসাবে যাচ্ছে নতুন বাহিনী। অমরনাথ যাত্রা শেষ হচ্ছে ১৫ আগস্ট।
রাজ্যে যে কোনও সময় হতে পারে বিধানসভা নির্বাচন। বাড়তি বাহিনীকে নির্বাচনে নিরাপত্তার দেখভালেও ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
এদিকে কাশ্মীরে আরও বাহিনী পাঠানোর কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ট্যুইটে এর বিরোধিতা করে লিখেছেন, কাশ্মীর একটি রাজনৈতিক সমস্যা, সামরিক রাস্তায় যার সমাধান সম্ভব নয়। কেন্দ্রের কাশ্মীর নীতির পর্যালোচনা, পুরো বদল করা প্রয়োজন বলেও অভিমত তাঁর। কেন্দ্রের অতিরিক্ত ১০০০০ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্তে জনসাধারণের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভাব নেই। ভারত সরকার নতুন করে ভেবে নীতির খোলনলচে বদল করুক।




প্রাক্তন আমলা, রাজনীতিতে নামা শাহ ফয়সলও ট্যুইট করেছেন, বাড়তি ১০০ কোম্পানি বাহিনীর পাঠানো সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বার্তায় কাশ্মীরে প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কেউ জানে না, কেন আচমকা এই বাহিনী জড়ো করার সিদ্ধান্ত। খারাপ কিছু একটা ঘটতে চলেছে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। ৩৫এ ধারা? রাতটা দীর্ঘ হতে চলেছে।
প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩৫ এ ধারা জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভাকে রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার মাপকাঠি ঠিক করার ক্ষমতা দিয়েছে, বাসিন্দাদের সম্পত্তি অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ক্ষমতা, সুবিধা অর্পনের অধিকারও দিয়েছে। এই ধারার আওতায় কোনও নিয়মকেই আইনি চ্যালেঞ্জ করা যায় না।
সিআরপিএফের কাশ্মীর জোনের আইজি রাকেশ কুমার অবশ্য মিডিয়াকে জানিয়েছেন, রুটিনমাফিক সন্ত্রাসদমন অভিযান, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই বাড়তি বাহিনী আসছে। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য খুঁজতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।