নয়াদিল্লি: কেন্দ্র দেশব্যাপী শরিয়ত আদালত বা দারুল কাজা চালুর প্রস্তাব খারিজ করে দিল। কেন্দ্রীয় আইন ও ন্যয়বিচার মন্ত্রী পি পি চৌধুরি জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার এমন উদ্যোগের সম্পূর্ণ বিরোধী, তাছাড়া তা আইনের যুক্তিতেও গ্রহণযোগ্য নয়। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সনাল ল বোর্ডের দেশের সব জেলায় দারুল কাজা বা শরিয়ত আদালত চালুর ঘোষণায় বিতর্কের মধ্যেই তিনি বলেন, বিতর্ক নিষ্প্রয়োজন। এটা সংবিধানের বিরোধী। এআইএমপিএলবি-র আদালত স্থাপনের কোনও ক্ষমতাই নেই। যারা এর সমর্থন করছে, তারাও জানে এটা আইনের চোখে ধোঁপে টিকবে না। আসলে এর পিছনে রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নেই।
সংগঠনের সচিব জাফরায়েব জিলানির সওয়াল, এই পদক্ষেপ ১০০ শতাংশ সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। দারুল কাজা ও দেওয়ানি আদালতের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
দেশে সুপ্রিম কোর্ট থাকতে কেন তাঁরা ইসলামি আইনে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত গড়তে চাইছেন, প্রশ্ন করা হলে জিলানি বলেন, এটা কোনও আদালতই নয়। আমরা বলছি এটা দারুল কাজা, যেখানে একজন কাজি লোকের সমস্যা, অভাব-অভিযোগ শুনবেন। সেখানে তিনি বিবদমান দুটি পক্ষের বক্তব্য শরিয়তের মাপকাঠিতে খতিয়ে দেখে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করবেন। দুপক্ষ যদি তা মেনে নেয়, তাহলে দেওয়ানি আদালতে যাবে না। দেওয়ানি আদালতের সঙ্গে দারুল কাজার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই এর নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে।
তিনি এও বলেন, বিশ্ব লোচয়ন মদন মামলায় বিষয়টিকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে বলা হয়েছে, দারুল কাজা এক ধরনের সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা। কিন্তু আসলে দারুল কাজা সব পক্ষের সম্মতি নিয়েই ইস্যু হাতে নেয়। সব পক্ষ কাজিকে অধিকার দিলেই তিনি এগোন। মামলা দেওয়ানি আদালতে গেলে কাজি কখনও সেখানে হস্তক্ষেপ করেন না। এটা ১০০ শতাংশ সংবিধানসম্মত বিষয়। আমাদের নিজেদের ধর্মাচরণের স্বাধীনতা আছে। গতকালই জিলানি বলেন, উত্তরপ্রদেশে ৪০টি শরিয়ত আদালত আছে, বোর্ড দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে এমন আদালত গড়তে চায়। শরিয়তি আইন চালুর জন্য বোর্ড তাদের কমিটিকেও সক্রিয় করতে চায়। বিজেপি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করবে।
উত্তরপ্রদেশ শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এমন প্রস্তাব রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল বলে জানিয়ে বলেছে, ভারতে শরিয়তি আদালতের কোনও স্থান নেই।