নয়াদিল্লি: দেশে যাঁরা মোবাইল ব্যবহার করছেন, আগামী দিনেও করবেন, তাঁদের পরিচয় খতিয়ে দেখার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে দু সপ্তাহের মধ্যে তাদের অবহিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

মোবাইল ব্যবহারকারীরা মোবাইল সংযোগ নেওয়ার সময় যে ব্যক্তিগত তথ্য জমা দেন, তা কতদূর সঠিক, তা যাচাই করে দেখার একটি যথাযথ মেকানিজম বা ব্যবস্থা চালু করতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ পিটিশন দিয়েছে লোক নীতি ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও। তাদের বক্তব্য, কেউ মোবাইল নম্বর নেওয়ার সময় যেসব তথ্য দিচ্ছেন, তা ঠিক না ভুল, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি দাবি করে, দেশে এই মুহূর্তে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ৫ কোটি। এর মধ্যে একটা বড় অংশের গ্রাহককে, সঠিকভাবে পরিচয় যাচাই না করেই নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন যেহেতু ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে মোবাইল ফোনের নম্বরকে যুক্ত করা হচ্ছে, তাই প্রতারকদের হাত থেকে বাঁচতে, কাউকে নম্বর দেওয়ার আগে ভাল করে তার নথিপত্র খতিয়ে দেখা উচিত।

সোমবার মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে সিম কার্ড পাওয়া কোনও ব্যক্তি যদি, কারও সঙ্গে প্রতারণা করে, কীভাবে তাকে ধরা যাবে?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কাউকে নম্বর দেওয়ার আগে, তার পরিচয় সঠিকভাবে যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি গ্রাহকের ভেরিফিকেশন সুনিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২ সপ্তাহের মধ্যে তাদের জানাতে হবে, কেন্দ্র কী করছে এ ব্যাপারে।

মোবাইল ফোনের নম্বর ব্যবহার করে অন্যের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাট করার ঘটনা নতুন নয়। গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বহু ব্যাঙ্ক গ্রাহক। অভিযোগ, গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে বহু ক্ষেত্রেই উপযুক্ত ভেরিফিকেশন ছাড়াই মুড়ি-মুড়কির মতো সিম কার্ড বিলি করে পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি। অন্যের নথি ব্যবহার করে সিম কার্ড তোলার ঘটনাও আকছার! এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কিংয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনের নম্বরকে জোড়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। জোরকদমে চলছে প্রচার। যদিও অনেকেরই আশঙ্কা, মোবাইল-লেনদেন বাড়লে আরও বাড়তে পারে প্রতারকদের রমরমা। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগে সবদিক খতিয়ে দেখ, তারপর এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করা উচিত। এবার সেই রক্ষাকবচের কথাই বলল সুপ্রিম কোর্টও!