মুম্বই: ২৬/১১-র মুম্বই সন্ত্রাসে রক্ত ঝরেছিল যে চাবাড হাউসে, ভারত সফরে আসা ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু বৃহস্পতিবার সেখানে পা দিয়ে আপ্লুত হয়ে গেলেন। চাবাড হাউস বা নরিম্যান হাউসেই তাঁর সঙ্গে দেখা হল ১১ বছরের মোসে হোল্টজবার্গের, যার বাবা গ্যাব্রিয়েল হোল্টজবার্গ, মা রিভকা ৯ বছর আগের মুম্বই হানার সেই ভয়ঙ্কর রাতে আরও ৬ জনের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছিলেন। সেদিন মোটে দু বছরের শিশু মোসের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন ভারতীয় আয়া সান্দ্রা স্যামুয়েল। এখন তিনি ইজরায়েলে থাকেন। কোলাবার পাঁচতলার চাবাড হাউসে একটি সাংস্কৃতিক কার্যালয় চালাতেন মোসের বাবা-মা, ওই ইহুদি দম্পতি।মোসেও এখন ইজরায়েলে দাদু-ঠাকুমার কাছে থাকে। নেতানইয়াহুর সফর উপলক্ষ্যে সে মুম্বই এসেছে, বাবা-মাকে যেখানে চিরদিনের মতো হারিয়েছিল, সেখানে।
তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে নেতানইয়াহু চাবাড হাউসকে ভালবাসার অভিনব প্রতীক হিসাবে তুলে ধরেন, যে ভালবাসা ইজরায়েলের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ ঘৃণার বলি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, একদিকে ইজরায়েলি জনগণের প্রতি ভালবাসা, আবার তাঁদের প্রতি ঘৃণার এক অভিনব মিলনস্থল এই জায়গাটি। ইজরায়েল মুক্তির জন্য পরিচিত।
চাবাড হাউসে সে যে ঘরে থাকত, সেটি নেতানইয়াহুকে দেখায় মোসে। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে নেতানইয়াহু বলেন, তোমার বাবা-মা মানুষকে ভালবেসেছেন, এই বাড়িতে আপন করেছেন সবাইকে। প্রতিটি ইহুদিকে ঘর দিয়েছেন তাঁরা। এটাই হল ভালবাসার ইজরায়েল, কিন্তু সন্ত্রাসবাদীরা তাকে ঘৃণা করেছে।
ভারতীয় ধাত্রীর ভালবাসার জন্যই সন্ত্রাসবাদীরা মোসের ক্ষতি করতে পারেনি বলে জানান নেতানইয়াহু। বলেন, অতীতে ইহুদি জনগণকে বহু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে, কিন্তু ঈশ্বর পাশে থাকায় তারা সব জয় করেছেন। ইজরায়েলের মানুষ বেঁচে আছেন, চিরকাল থাকবেনও।
মোসেকে স্মারক উপহার দেন তিনি। সে-ও ১৩ বছর বয়সের তার ভবিষ্যতের ধর্মীয় রীতিমাফিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায় নেতানইয়াহুকে। তাকে ভারতে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি পালনে সে তাঁকে ধন্যবাদও জানায়।