নয়াদিল্লি: মাসুদ আজহার ইস্যুতে চিনের সাফাই উড়িয়ে দিল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে পঠানকোট হামলার মাথা জয়েশ-ঈ-মহম্মদ পান্ডা মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার মার্কিন প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়নি, চিনের এহেন দাবি নাকচ করে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিল, বেজিং অবস্থান বদলাক, তবেই ঐকমত্য গড়ে উঠবে।


মাসুদকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকার আনা প্রস্তাবে বাধাদানের সমর্থনে গতকাল চিন এই বলে সওয়াল করে যে, এ ব্যাপারে তাদের সম্মতি দানের প্রয়োজনীয় 'শর্তাবলী' পূরণ হয়নি। চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বেজিংয়ে এও বলেন, 'সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির' মধ্যে সহমত গড়ার সুযোগ করে দিতেই তাঁদের এহেন পদক্ষেপ। তাঁর দাবি, ভারতের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর আমরা ওই প্রস্তাবে টেকনিক্যাল বাধা দিয়েছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ পরস্পরের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের যথেষ্ট সুযোগ পাবে যাতে এটা সুনিশ্চিত হয় যে, কমিটি সকলের সহমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে বৃহত্ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিলমোহর রয়েছে।

পাল্টা এদিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ওই প্রস্তাব ভারত তোলেনি, তুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তিন স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র-আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। আমাদের মতে, একটা 'আদর্শ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রস্তাব' ছিল এটা, কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী নেতা মাসুদ আজহারকে নিষেধের তালিকায় ফেলা ছিল এর উদ্দেশ্য। তার সংগঠন জয়েশ-ঈ-মহম্মদকে ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ১২৬৭ কমিটি। এটাকে ভারত, পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে দেখি না আমরা, দেখি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ব্যাপার হিসাবে। আশা করি, ক্রমশ চিনও আমাদের অবস্থান বুঝতে পারবে, তা মেনে নিতে বাধ্য হবে। অবশ্যই, চিনের অবস্থানে বদল হলে ঐকমত্যও তৈরি হবে। ভারতে চিনা রাষ্ট্রদূতের কাছে বিষয়টি তোলা হচ্ছে, বেজিংয়েও একই ধরনের ডিমার্চে তৈরি হচ্ছে।
স্বরূপ আরও জানান, ১৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে চারটি নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তির পরই আমেরিকার মাসুদ-বিরোধী ওই প্রস্তাব জমা পড়ে।

লোকসভায় এদিন চিনের বারংবার মাসুদকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার প্রস্তাবে বাধাদানে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব আর কে সিংহ বলেন,  ভারতের চিনকে একথা সাফ বলে দেওয়া উচিত যে, তাদের এই আচরণের ফল ভাল নাও হতে পারে। চিন 'ভেবেচিন্তেই অ-বন্ধুসুলভ' আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ভারতের বিরাট বাজার আছে, যেখানে চিন থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে ভারতও পাল্টা চাপ দিতে পারে বলে সরকারের মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি।