নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অশান্তির জেরে নিরাপত্তারক্ষীর পেলেট গানের গুলিতে বহু বিক্ষোভকারী বরাবরের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে পেলেট গান ব্যবহার কতটা যুক্তিযুক্ত। এ ব্যাপারে মতামত দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল নিয়োগ করেছে, তারা নবনির্মিত পাভা শেলস ব্যবহারের পক্ষে। ছররার বদলে এতে ব্যবহার হবে লঙ্কার গুঁড়ো। বড় কোনও ক্ষতি না হলেও যার ওপর এই লঙ্কার গুঁড়ো ছোঁড়া হবে, সে বেশ কিছুক্ষণ নড়াচড়া করার অবস্থায় থাকবে না।


এ ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও সরকারি সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, বিএসএফ, সিআরপিএফ, জম্মু কাশ্মীর পুলিশ, দিল্লি আইআইটি ও অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে যে ৭ বিশেষজ্ঞের প্যানেল গঠিত হয়েছে, তারা বিক্ষোভকারীদের হঠাতে এই পাভা শেলস ব্যবহারের পক্ষে। এই শেলস তৈরি করেছে লখনউয়ের ল্যাবরেটরি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টক্সিকোলজি রিসার্চ। এ সপ্তাহের শুরুতে পাভা শেলসের পরীক্ষামূলক ব্যবহারও হয়েছে।

‘পাভা’ শব্দটি এসেছে পিলারগনিক অ্যাসিড ভ্যানিলাইল অ্যামাইড থেকে, যার আর এক নাম ননিভামাইড। সহজ কথায়, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো। দাঙ্গাকারীদের ওপর এই শেল একবার ছুঁড়ে দিলে প্রচণ্ড জ্বলুনিতে তারা আর নড়াচড়া করার অবস্থায় থাকবে না। সেদিক থেকে এই লঙ্কার গুঁড়ো কাঁদানে গ্যাস বা গোলমরিচের গুঁড়োর থেকে অনেক বেশি কার্যকরী। যদিও এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির সম্ভাবনা কম।

বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ শ্রীনগরে গিয়ে বলে আসেন, বিক্ষোভকারীদের দীর্ঘকালীন ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পেলেট গানের বদলে অন্য কোনও অস্ত্র ব্যবহারের কথা   ভাবছে। ক'দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ প্যানেল রিপোর্ট দেবে বলে জানান তিনি।

যদিও পেলেট গানের বদলে লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছে সিআরপিএফ। তাদের কথায়, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বড্ড বেশি তাড়াহুড়ো করছে কেন্দ্র। ঠান্ডা ঘরে বসে পেলেট গান নিষিদ্ধ করা এক কাজ আর পথে নেমে রক্তপিপাসু, হিংস্র জনতার  মুখোমুখি হওয়া অন্য। যে জনতা পুলিশ স্টেশন আর নিরাপত্তারক্ষীর ছাউনি মাটিতে মিশিয়ে দিতে হামলা চালায়, তাদের হঠাতে পেলেট গানই সবথেকে কার্যকরী ও কম ক্ষতিকর অস্ত্র বলে তারা মনে করছে। বরং তাদের মতে, ছররার বদলে লঙ্কার গুঁড়ো ব্যবহার শুরু হলে তা নিষ্ক্রিয় করতে দ্রুত কোনও ব্যবস্থা খুঁজে নেবে বিক্ষোভকারীরা। আর সে ক্ষেত্রে খুনে জনতাকে সরাতে  গুলি চালানো ছাড়া উপায় থাকবে না। তাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাবে এক লাফে।