নয়াদিল্লি: পূ্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-তে গত তিন মাস ধরে ভারত ও চিনের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। ভারতীয় সেনা চিনকে তাদের নিজেদের সীমার মধ্যে থাকতে বাধ্য করার পর ড্রাগন এখন ঘুর পথে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। শি জিনপিং সরকার এখন ভারতে ডিজিটাল অনুপ্রবেশের কাজে লিপ্ত। কিন্তু ভারত তাদের এই বড়ষড় চক্রান্তের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বড়সড় তথ্য ফাঁস করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুসারে, চিন ভারতের রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় পদাধিকারীদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। চিনের এই নজরদারির তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরা, প্রাক্তন ও বর্তমান ৪০ মুখ্যমন্ত্রী, সাড়ে তিনশো সাংসদ, আইনপ্রণেতা, বিধায়ক, মেয়র, পঞ্চায়েত প্রধান ও সেনার সঙ্গে যুক্তরা সহ প্রায় ১৩৫০ জন।


চিনের কোম্পানি শেনঝেন ইনফোটেক ও শেনহুয়া ইনফোটেক এই নজরদারির কাজ করছে। শেনঝেন ইনফোটেক কোম্পানি এই নজরজারি চিনের কমিউনিস্ট পার্টি সরকারের হয়ে করছে। এই কোম্পানির কাজ অন্য দেশের ওপর নজর রাখা।
কোন কোন শীর্ষ পদাধিকারীদের ওপর নজরদারি?

-বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

-প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ

-কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী

-সিডিএস বিপিন রাওয়াত

-ভারতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডে

-প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া

-পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ ২৪ জন মুখ্যমন্ত্রী

-৩৫০ সাংসদ

-১৬ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী

-৭০ মেয়র ও ডেপুটি মেয়র

বিভিন্ন দলের প্রায় ৭০০ নেতার ওপরও নজরদারি চালানো হচ্ছে।
এছাড়াও এমন ৪৬০ জনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে, যাঁরা এই নেতাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। ১০০-র বেশি নেতার ফ্যামিলি ট্রি বানানো হয়েছে, যাঁদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রায় বারোজনের বেশি রাজ্যপাল ও প্রাক্তন রাজ্যপালদেরও বিস্তারিত তথ্য রাখা হয়েছে। চিনের এই নজরদারির তালিকায় রয়েছেন বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের ২০০ ছোট-বড় নেতা।

অর্থাত্ ভারতের রাজনৈতিক জগতের সমস্ত শীর্ষস্থানীয়রা চিনের নজরদারির আওতায় রয়েছেন। যে নেতাদের ওপর নজরজারি চালানো সংক্রান্ত এই তথ্য সামনে এসেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামও।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী ও চিনের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাও ও অটল বিহারী বাজপেয়ী সংক্রান্ত তথ্যের ওপরও চিনের নজরদারদের নজর রয়েছে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টানায়েক, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মণীষ সিসোদিয়ার ওপরও ড্রাগনের নজর রয়েছে। সেইসঙ্গে কমলনাথ, লালুপ্রসাদ যাদব ও মুলায়ম সিংহ যাদবের মতো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের ওপর চিন নজরদারি করেছে।

চিনের এই নজরদারির জালে শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নন, রয়েছেন সেনার বেশ কয়েকজন প্রাক্তন আধিকারিক, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও মিশনও চিনের নজরে রয়েছে।