নয়াদিল্লি: উরি সন্ত্রাসের পরেও পাকিস্তানের পাশ থেকে সরে আসেনি চিন। মাসুদ আজহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানো থেকে এনএসজি সদস্যপদ-বারবার ভারতের সামনে প্রতিবন্ধকতা খাড়া করেছে তারা। তাই ড্রাগনকে এবার হাতের বদলে ভাতে মারার পথ নিয়েছেন মানুষ। বাজার ছেয়ে যাওয়া চিনা বাজি দীপাবলিতে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। ফলে দীপাবলির বিক্রিবাটা শুরু হয়ে গেলেও খাঁ খাঁ করছে পুরনো দিল্লির চিনা বাজির দোকানগুলো। বিক্রেতাদের মনে সুখ নেই।


দীপাবলিতে চিনা পটকা বয়কট করার ডাকে তোলপাড় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। বেশ কয়েকজন রাজনীতিকও মানুষকে অনুরোধ করেছেন, মেড ইন চায়না বাজি বয়কট করতে। পুরনো দিল্লির বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এই প্রচারের আবেগের সঙ্গে সহমত হলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এর ফলে ব্যবসায়ীদের বিশাল টাকা ক্ষতি হতে পারে, কারণ গত চার মাস ধরে লাখো টাকার চিনা জিনিসপত্র বিক্রির জন্য দোকানে জমা করেছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনীতিকদের উচিত সাধারণ বিক্রেতাদের কথা ভাবা। এ ধরনের জিনিস তৈরির পরিকাঠামো এখানে নেই, সুতরাং চিনা মালপত্র বয়কটের ডাক দিয়ে লাভ কী।

বেশ কয়েক বছর ধরে দীপাবলির জিনিসপত্র বিক্রিতে কার্যত একাধিপত্য তৈরি করেছে চিনা সংস্থাগুলি। ছোট্ট টুনিলাইট থেকে অলঙ্করণের বড় বড় জিনিসপত্র- সবই আসে চিন থেকে। চিনা ড্রাগনের হুঙ্কারে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য হয়েছে বহু ছোটখাটো স্থানীয় উদ্যোগ। এমনকী লক্ষ্মী, গণেশের মূর্তিও আসছে চিন থেকে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় চিনা জিনিসপত্র বয়কটের ডাকে চাপে পড়েছে চিনা সংস্থাগুলি। ফেসবুক, টুইটারে প্রচার চলেছে, এই বয়কটে দু’ধরনের উপকার। প্রথমত, চিনা অর্থনীতিকে চাপে ফেলে তাদের ভারতবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য করা যাবে, দ্বিতীয়ত, লাভের মুখ দেখবে স্বদেশি সংস্থাগুলি।

কোনও কোনও বিক্রেতা এই বয়কটে লোকসানের আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগে থাকলেও অনেকেই কিন্তু স্বাগত জানিয়েছেন এই উদ্যোগ। তাঁদের মতে, যে দেশ ভারতবিরোধী, তাদের জিনিসপত্র বয়কটের মধ্যে কোনও ভুল নেই। দরিবা কালান এলাকায় বাজি বিক্রেতারা পোস্টার দিয়ে জানিয়েছেন, চিনা জিনিস বিক্রি করছেন না তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, চিনা  বাজি পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক, খারাপ স্বাস্থ্যের পক্ষেও। তবে বিক্রিবাটায় প্রভাবের কথা মেনে নিচ্ছেন তাঁরাও। তাই তাঁদের বক্তব্য, খুচরো বিক্রেতাদের ওপর চাপ না দিয়ে সরকারের উচিত, চিনা জিনিসপত্র আমদানি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া।