নয়াদিল্লি:  ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে হত্যা করা হয়েছিল ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীকে। কিন্তু এই হত্যার ঘটনাটি যে ঘটতে পারে, তা প্রায় বছর পাঁচেক আগেই আঁচ করতে পেরেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ।

সম্প্রতি সিআইএ-র তরফে ১৯৮৬ সালে তাদের তৈরি ২৩ পাতার একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে। রিপোর্টের নাম ছিল 'ইন্ডিয়া আফটার রাজীব.....'। এই রিপোর্টের মূল বিষয় ছিল, ভারতীয় রাজনীতি থেকে রাজীব গাঁধী যদি শীঘ্র বিদায় নেন বা তাঁকে হত্যা করা হয়, তাহলে কীহবে? রিপোর্টটি তৈরি করে অন্য সিআইএ আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের মতামত জানার জন্যে।

তবে এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্টের পুরো নাম জানা যায়নি, কারণ অর্ধেকাংশ কোনও এক অজ্ঞাত কারণে মুছে গেছে। রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে, ১৯৮৬-র জানুয়ারি পর্যন্ত সিআইএ-র সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে।

সূত্রের খবর,  রিপোর্টের প্রথম লাইন শুরু হয়েছিল এই বলে যে, রাজীব গাঁধীর প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়কাল ১৯৮৯-এ শেষ হওয়ার আগেই, তাঁকে হত্যা করার সম্ভাবনা রয়েছে। অদ্ভূতভাবেই হত্যার ঘটনাটি ঘটে ১৯৯১ সালে।  রিপোর্টে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয় রাজীব গাঁধীর অনুপস্থিতি ভারতীয় রাজনীতি ও বিশ্ব রাজনীতির কী হবে? ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউএসএসআর-এর সম্পর্ক কীহবে?

রিপোর্টে স্পষ্ট লেখা আছে কোন কোন চরমপন্থী সংগঠনের থেকে জীবন সংশয়ের আশঙ্কা রয়েছে রাজীব গাঁধীর। সেখানে একথাও উল্লেখ করা হয় যদি কাশ্মীরি মুসলিম ও শিখদের কোনও সংগঠন রাজীব গাঁধীকে হত্যা করে, তাহলে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সারা দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রিপোর্টের ওই জায়গায় শ্রীলঙ্কার তামিল চরমপন্থীদের কথা কোথাও উল্লেখ করা ছিল না। তবে রিপোর্টের অন্য একটি সেকশনে রাজীবের শ্রীলঙ্কার তামিলদের সমস্যা সমাধানে না না উদ্যোগ নেওয়ার কথা লেখা ছিল।

রিপোর্টে আরও একটি অদ্ভূত বিষয় উল্লেখ করা আছে। রাজীব গাঁধীর যদি মৃত্যু হয়, তাহলে দিল্লির মসনদে রাজীবের উত্তরাধিকারী হিসেবে পি.ভি নরসিংহ রাও বা ভি.পি সিংহকে দেখা যেতে পারে। আশ্চর্যজনক ভাবে রাজীব গাঁধীর মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পি.ভি নরসিংহ রাও।

তবে এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্টের বহু জায়গাই মুছে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে।