বেঙ্গালুরু: মন্ত্রী ও দুই উচ্চপদস্থ আধিকারিকের হেনস্থার জেরে ম্যাঙ্গালুরুর ডেপুটি পুলিশ সুপার এম কে গঙ্গাপতির আত্মহত্যার অভিযোগের তদন্তভার সিআইডি-কে দিল কর্ণাটক সরকার। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই ঘোষণা করে বলেছেন, গঙ্গাপতিকে হেনস্থা করা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


 

আত্মহত্যা করার আগে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গঙ্গাপতি বলেছিলেন, পুলিশ বিভাগে জাতের ভিত্তিতে যে বদলি হচ্ছে তাতে তিনি হতাশ। উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এটা করা উচিত না। তাঁর যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে দায়ী থাকবেন আইজি (গোয়েন্দা) এ এম প্রসাদ, আইজিপি (লোকায়ুক্ত) প্রণব মহান্তি এবং রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে জে জর্জ। এরপরেই চরম সিদ্ধান্ত নেন গঙ্গাপতি।

 

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্ণাটক সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বি এস ইয়েদিয়ুরাপ্পার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে সিবিআই তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। জর্জকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইয়েদিয়ুরাপ্পা। কর্ণাটকের একাধিক জায়গায় জর্জের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন বিজেপি নেতারা।

 

সংযুক্ত জনতা দলের নেতা এইচডি দেবেগৌড়া ও এইচডি কুমারস্বামী বলেছেন, কর্ণাটকে সৎ আধিকারিকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। জর্জ ও অভিযুক্ত দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

সিদ্দারামাইয়া অবশ্য বিরোধীদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জর্জের পদত্যাগ দাবি করার নৈতিক অধিকার নেই বিজেপি-র। অভিযুক্ত মন্ত্রীও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

 

কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বলেছেন, এডিজিপি প্রসাদের সঙ্গে আট বছর আগে কাজ করেছিলেন গঙ্গাপতি। সেই সময় কিছু ঘটে থাকতে পারে। তদন্ত না করে কিছু বলা যাবে না।

 

আইজিপি (দক্ষিণ) বি কে সিংহ বলেছেন, গঙ্গাপতির বাড়ি থেকে সুইসাইড নোট, কিছু ওষুধের প্রেসক্রিপসন এবং দুটি খোল উদ্ধার হয়েছে। গঙ্গাপতির বাবা জানিয়েছেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে তাঁর ছেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

গঙ্গাপতির স্ত্রী পবনা বলেছেন, পুলিশ বিভাগ থেকে তাঁর স্বামীর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তিনি প্রায়ই এই কথা বলতেন। তবে তাঁরা এর বেশি কিছু জানেন না।

 

গঙ্গাপতির ভাই থাম্মাইয়াও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক। তিনি আবার বলেছেন, দাদার উপর মারাত্মক চাপ ছিল। তবে তাঁর অভিযোগ কল্পিত। কেউ তাঁকে হেনস্থা করেননি। পুলিশ বিভাগের সবাই জানতেন গঙ্গাপতি মনমরা হয়ে থাকতেন।