নয়াদিল্লি: অবশেষে বরফ গলাতে উদ্যোগী প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। গত শুক্রবার নজিরবিহীন ভাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে চার শীর্ষ বিচারপতি তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলির শুনানি তিনি জুনিয়র বিচারপতিদের বেঞ্চে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টে সব ঠিকঠাক চলছে না বলে অভিযোগ করেন। সেই প্রেক্ষাপটে ওই চারজনের সঙ্গে মতপার্থক্য ঘোচাতে আজ সকালে শীর্ষ আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরুর আগে চারজনের সঙ্গে প্রায় ১৫ মিনিট কথা বলেন তিনি। আরও কয়েকজন বিচারপতিও তখন সেখানে ছিলেন বলে সূত্রের খবর। জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ, এম বি লোকুর ও ক্যুরিয়েন জোসেফ, এই চার বিচারপতির সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তারপর সকলেই যে যার কাজে চলে যান।
একটি সূত্রে বলা হয়েছে, এদিনের বৈঠকটি নিজে ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি। তবে আজকের আলোচনায় বিরোধ-বিবাদের বিষয়গুলিতে ঐকমত্য না হওয়ায় আগামীকাল আবার ওই চার সিনিয়র বিচারপতির সঙ্গে বসতে পারেন তিনি।
বিভিন্ন আইনজীবী সংগঠনের তরফে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দিকে চার বিচারপতির অভিযোগের আঙুল ওঠার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতি কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হলেও সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট অগ্রগতির লক্ষণ নেই। এদিনই অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপালও বলেন, আমার ধারণা, সমস্যার নিরসন হয়নি। আশা করছি, পুরোপুরি বিষয়টি মিটে যেতে দু-তিনদিন লাগবে। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিংহও চলতি সপ্তাহের শেষে সঙ্কট মিটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাব তিনি গত রবিবার যখন প্রধান বিচারপতিকে জানান, তখনই সঙ্কট দূর হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত পান। প্রধান বিচারপতিও আশা জানান, সপ্তাহখানেকের ভিতরেই সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
যদিও গতকাল বেনুগোপাল ও বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মানান কুমার মিশ্র দাবি করেছিলেন, সমস্যা মিটে গিয়েছে, আর কোনও বিতর্কই নেই। বেনুগোপাল বলেছিলেন, সব কিছু মিটে গিয়েছে। সমস্যাকে স্রেফ চায়ের কাপে তুফান আখ্যা দেন তিনি। বার কাউন্সিলও মন্তব্য করে, কাহানি খতম।
গত শনিবার সু্প্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন জরুরি বৈঠকে প্রস্তাব পাশ করে বলে, প্রধান বিচারপতি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের নিয়ে ফুল কোর্টের বৈঠক ডাকুন, যাবতীয় বকেয়া জনস্বার্থ পিটিশন কলেজিয়ামের সদস্য পাঁচ সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতির কাছে শুনানির জন্য পাঠান। গত রবিবারই প্রধান বিচারপতি বার কাউন্সিলের ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন, কথা বলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা সঞ্জয় সিংহের সঙ্গেও। তিনি নাকি তাঁদের সবাইকেই আশ্বস্ত করেন যে, সঙ্কট শীঘ্রই মিটে যাবে, স্বাভাবিকতা ফিরবে।