নয়াদিল্লি:  আবহাওয়া পরিবর্তন প্যাসিফিক এবং এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়বাহ প্রভাব ফেলবে, দাবি সাম্প্রতিক এক গবেষণার। ওই গবেষণাতেই দাবি করা হয়েছে, পরিবেশ পরিবর্তন দক্ষিণ ভারতে চাল উত্পাদনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাল উত্পাদনের পরিমাণ পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে সেই উত্পাদন ১৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যেতে পারে, ২০৮০ সালে ১৭ শতাংশ চালের উত্পাদন কমবে দক্ষিণ ভারতে। তবে উত্তর ভারতে চালের উত্পাদন বাড়বে, বলছে গবেষণা।


এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং পটসড্যাম ইন্সটিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ একটি যৌথ সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই গবেষণার রিপোর্টই বলছে, উল্লেখিত অঞ্চলগুলোর উন্নয়ন মারাত্মক ধাক্কা পাবে। বর্তমানে বৃদ্ধির হার যতটা উর্ধ্বগামী, সেটা উল্টো পথেও হাঁটতে পারে। উন্নয়নের গতি স্লথ হয়ে যাওয়ার প্রভাব মানুষের জীবনধারার ওপরও পড়বে বলে জানা গিয়েছে।

ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল যেমন চিন, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়া মাঝেমধ্যেই ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। সেক্ষেত্রে আবহাওয়ার বিশাল পরিবর্তনের জেরে এই সমস্ত দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলো মিলিয়েও যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে রিপোর্টে। যার ফলে প্রায় ১৩০ মিলিয়ন মানুষের জীবনে বিপদ ঘনিয়ে আসবে।

১৩৬টি উপকূলবর্তী শহরের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছিলেন গবেষকরা। সেখানেই তাঁরা দেখেছেন বন্যার জেরে ২০০৫ সালের মধ্যে ৬ মার্কিন বিলিয়ন ডলারের মতো ক্ষতি হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে সেই ক্ষতির পরিমাণ ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছোঁবে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং পরিবেশ পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যে কুড়িটি শহর সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে, তার মধ্যে রয়েছে এশিয়ার গুয়ানঝু (চিন), মুম্বই, কলকাতা, শেনঝেন (চিন), তিয়ানজিন (চিন), হো চি মিন  (ভিয়েতনাম), জাকার্তা (ইন্দোনেশিয়া), চেন্নাই, সুরাত, ঝানজিয়াং (চিন), ব্যাঙ্কক (তাইল্যান্ড), জিয়ামেন (চিন), নাগোয়া (জাপান)।

এই গবেষণা প্রসঙ্গে পিআইকে-র ডিরেক্টর প্রফেসর হ্যানস জোচিম দাবি করেন, ২১ শতকে মানব সভ্যতার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং তার ফলে পরিবেশ পরিবর্তন। তাঁর মত, এখনই এশিয়ার সমস্ত দেশগুলোর সচেতন হওয়া উচিত্, এবং একসঙ্গে বসে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে সঠিক স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা উচিত্।