নয়াদিল্লি: পরস্পরের প্রতি অবস্থান নরম করে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে জোট বাঁধার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস, আমআদমি পার্টি (আপ)? এমনই জল্পনা ঘুরছে রাজধানীতে। সম্প্রতি ট্যুইট করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ভূয়সী প্রশংসা করেন আপ প্রতিষ্ঠাতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তাতেই দু দলের কাছাকাছি আসছে কিনা, আলোচনা শুরু হয়। কেননা কেজরীবাল ২০১৩-য় প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন, মনমোহন কংগ্রেসের ভিতরে, নিজের সরকারেও দুর্নীতি রোধে ব্যর্থ। কিন্তু তিনিই এই সেদিন ট্যুইট করেন, মনমোহনের মতো শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রীর অভাব বোধ করছেন দেশবাসী। দেশের প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষিত হওয়া উচিত।

সূত্রের খবর, কর্নাটকে জনতা দল (এস) এর সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী রফা করে বিজেপিকে ঠেকিয়ে সরকার গড়তে সফল হওয়ার পর কংগ্রেস এবার ২০১৯ এর মহারণে বিহারের ধাঁচে বিজেপি-বিরোধী মহাজোট গড়তে চাইছে। এই লক্ষ্যে তারা আপের সঙ্গে ঘরোয়া স্তরে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। দুই কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, অজয় মাকেন আপের প্রতিনিধির সঙ্গে নাকি কথা বলেছেন বিজেপি-বিরোধী জোট তৈরি নিয়ে।

সূত্রের দাবি, আপ দিল্লিতে ৫:২ রেশিওতে আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে কংগ্রেসকে। অর্থাত আপ ৫টি, কংগ্রেস ২টি আসনে লড়বে। যদিও কংগ্রেস পাল্টা দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনের মধ্যে তিনটি চাইছে। যদিও গোটা প্রক্রিয়ায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী সবুজ সংকেত দিয়েছেন কিনা, জানা যায়নি।

যদিও কংগ্রেসের দিল্লি শাখার প্রধান অজয় মাকেনের দাবি, কংগ্রেসের নেতা, কর্মীরা আপের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিরোধী। যখন কেজরীবাল সরকারের গ্রাফের 'দ্রুত পতন' হচ্ছে একদিকে, আরেকদিকে কংগ্রেসেরটা 'ঊর্ধ্বমুখী' হচ্ছে, সে সময় একজন দলীয় নেতা বা কর্মীও আপের সঙ্গে রফা চান না।
গতকাল মাকেন ও আপ নেতা দিলীপ পান্ডের ট্যুইট যুদ্ধও হয়, কে কাকে রফার প্রস্তাব আগে দিয়েছে, তা নিয়ে।

মাকেন লেখেন, ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনে আপ ৫৬-৫৭ শতাংশ ভোট পেলেও গত বছর দিল্লি পুরভোটে তা কমে ২৬ শতাংশ হয়। অন্যদিকে কংগ্রেসের ২০১৫-য় ৯.৫ শতাংশ ভোট ছিল, তা দিল্লি পুরভোটে বেড়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। দিল্লিবাসী বিদ্যুত, জল, শিক্ষার মতো ইস্যুতে আপকে প্রত্যাখ্যান করছে। কংগ্রেস নেতা, কর্মীরা ওদের সমর্থনের কোনও কারণ দেখছেন না। অরবিন্দ কেজরীবালই অন্না আন্দোলনের সময় বাবা রামদেব, জেনারেল ভি কে সিংহ, কিরণ বেদীদের পাশে ছিলেন, মোদীকে দানব বানিয়েছেন তিনিই। ধর্মনিরপেক্ষ জোট হতেই পারে, কিন্তু কী করে যারা মোদীকে দানব করে তুলে বাবা রামদেব, কিরণ বেদীদের পাশে নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিল, তাদের সঙ্গে আঁতাত হবে!

পাল্টা পান্ডে ট্যুইট করেন, অজয় মাকেনজি, কয়েকজন সিনিয়র কংগ্রেস নেতা আপের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কারণ তাঁরা পঞ্জাব, হরিয়ানায় আমাদের সাহায্যের বিনিময়ে দিল্লিতে পাল্টা একটা আসন চান।