নয়াদিল্লি: কর্নাটকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, তারা 'সহজে খুন করার সংস্কৃতি' চালু করতে চলেছে।
মঙ্গলবার কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে জনসভায় মোদী রাজ্যে কংগ্রেস শাসনে রাজনৈতিক খুনোখুনিতে দু ডজনেরও বেশি বিজেপি কর্মীর হত্যার অভিযোগ তুলে প্রশ্ন করেন, কী অপরাধ ছিল ওদের। ওরা আপনাদের মতের বিরোধিতা করতেন, কর্নাটকবাসীর হয়ে মুখ খুলতেন, তাই।
উদুপির জনসভায় তিনি বলেন, আমরা সহজে ব্যবসা বাণিজ্য করায় উত্সাহ দিতে চাই, আর ওরা মানে কংগ্রেস সহজে খুন করার সংস্কৃতি চালু করেছে।
সামনের দর্শকদের উদ্দেশ্যে মোদীর প্রশ্ন, কংগ্রেসকে কর্নাটক ও গোটা দেশ থেকেই নির্বাসন দেওয়া কি উচিত নয়, রাজনৈতিক হিংসা ছড়ানোর মানসিকতার অবসান কি কাম্য নয়। জবাব আসে, হ্যাঁ, হ্যাঁ।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর মহাত্মা গাঁধী কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেন, গত ৪ বছরে একের পর এক ভোটে কংগ্রেস পরাজিত হয়েছে, আর কর্নাটক বিধানসভার ফল বেরলে জাতির পিতার সেই 'শেষ স্বপ্ন' বাস্তবায়িত হবে!
উদুপিতে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করে মোদী বলেন, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর সরকার দেশের হাল ধরার আগে পর্যন্ত গরিব মানুষ ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার আওতার বাইরেই ছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, একটা সময় গরিবের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না, তারা ব্যাঙ্কে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারত না। অর্থনীতির মূল স্রোতের বাইরে পড়ে ছিল। আমরা ওদের জন্য জনধন প্রকল্প চালু করি।
এর আগে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারগুলি চাষি, বেকার, গরিবদের ঋণ দেয়নি, বঞ্চিত করেছে, পাশাপাশি মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে ব্যাঙ্ক লুঠ করতে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মোদী।

পাশাপাশি রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জেডি (এস) প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়াকে অপমান করার অভিযোগও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। দেবগৌড়াকে দেশের সবচেয়ে সম্মানিত, বড় মাপের নেতাদের অন্যতম বলে উল্লেখ করেন মোদী, তারপর বলেন, কিন্তু ১৫-২০ দিন আগে কংগ্রেস সভাপতিকে তাঁর সম্পর্কে যে ভাবে কথা বলতে শুনলাম, এটা কি আপনার সংস্কৃতি? কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে আপনার যাত্রা তো সবে শুরু হল। দেবগৌড়া দেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় নেতাদের মধ্যে পড়েন। আর তাঁকে আপনি অপমান করলেন!
রাহুল সম্প্রতি দেবগৌড়াকে জেডি (এস)-এর ঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে নিশানা করেন, তাঁকে বিজেপি-র 'বি টিম' বলেন। সে প্রসঙ্গেই মোদীর এই বক্তব্য।
কর্নাটক ভোটের বেশ কয়েকটি প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটেই দেবগৌড়ার প্রশংসা করলেন মোদী। দেবগৌড়া নিজে সম্প্রতি বলেছেন, তিনি ভোটের পর কিং মেকার নয়, কিং হবেন।
মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও প্রায়ই বিজেপি, জেডি(এস)-এর তলে তলে বোঝাপড়া আছে বলেন, এমনকী কুমারস্বামী বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন।