নয়াদিল্লি: জিএসটি বিল পাশ ইস্যুতে কার্যত একা হয়ে পড়া কংগ্রেস এবার সুর অনেকটাই নরম করতে চলেছে। সরকারের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে করের হার নিয়ে তাদের যে মূল দাবি ছিল, তা থেকে সরে আসতে পারে তারা। রাজ্যসভায় উপ বিরোধী দলনেতা আনন্দ শর্মা জানিয়েছেন, জিএসটি বিলে ১৮ শতাংশ কর ধার্যের জন্য কংগ্রেস এতদিন যে জোরাজুরি করে এসেছে, সেখান থেকে সরে আসতে পারে। মূলত এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কংগ্রেসের মতবিরোধের জন্য এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে জিএসটি। কয়েক মাস আগে কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীও ইঙ্গিত করেন, দুপক্ষের মতবিরোধ শেষ পর্যন্ত এসে আটকেছে ওই করের হারে। তবে আনন্দ শর্মার বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার এখনও জিএসটি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেনি, কথা ছাড়া কোনও সমাধানে পৌঁছনো কঠিন। সরকারকে বলতে হবে, ঠিক কতটা কর ধার্য করতে চায় তারা।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, অসম ও কেরলে দলের শোচনীয় ফলে কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে মাটি আরও সরে গিয়েছে। যেহেতু বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিও জিএসটি চাইছে, তাই বারবার এই বিল আটকানোর চেষ্টা করলে কংগ্রেস রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া সরকারপক্ষ যেভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বারবার দেশের উন্নয়ন রুখে দেওয়ার অভিযোগ তুলছে, তাতে ভোটাররা তাদের ওপর আরও বিমুখ হয়ে পড়ছেন বলে শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক দলটির আশঙ্কা।

তা ছাড়া কংগ্রেসের মধ্যেও জিএসটির বিরোধিতা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। অনেকের মতে, জিএসটি সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিলে করের হারের বিষয়টি ঢোকানোর জন্য জোরাজুরি করলে ধোপে টিকবে না সেই দাবি। তাঁরা মনে করাচ্ছেন, ইউপিএ-র আনা জিএসটি বিলেও এই বিষয়টি ছিল না। যদিও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম সহ বেশ কয়েকজন কর নিয়ে সরকারের ওপর চাপসৃষ্টির পক্ষপাতী। ১৮ তারিখ থেকে শুরু হতে চলা বাদল অধিবেশনে জিএসটি নিয়ে ফের ঝাঁপাবে কেন্দ্র। কংগ্রেসের চিন্তা, অধিবেশনে তাদের অবস্থান কী হবে। আবার জিএসটির বিরোধিতা করলে রাজনৈতিকভাবে একা হয়ে পড়ার আশঙ্কা, আবার এক কথায় জিএসটি মেনে নিলে মনে হতে পারে, তারা কেন্দ্রের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করল।