নয়াদিল্লি: জল্পনার অবসান। উত্তরপ্রদেশে কে হবেন কংগ্রেসের মুখ, সেই প্রশ্নের জবাব মিলল। দিল্লির তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে দল গোবলয়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যটিতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করছে বলে জানিয়ে দিলেন গুলাম নবি আজাদ। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত আজাদ জানান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও ভাল কাজের কথা বিবেচনা করেই শীলাকে সামনে রেখে উত্তরপ্রদেশে ভোটযুদ্ধে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে আজাদ বলেন, তাঁর অভিজ্ঞতা, ভাল কাজই তাঁর বড় পুঁজি হবে বলে মনে করে দল।


 

কংগ্রেস সূত্রে খবর, হিন্দি বলয়ের এই রাজ্যে দলের কৌশল তৈরির দায়িত্ব পাওয়া স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর সুপারিশ করেছিলেন, উল্লেখযোগ্য ব্রাহ্মণ মুখ হিসাবে শীলা দলের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। রাজ্যে ভোটের অঙ্কে বড় শক্তি ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের সমর্থন কংগ্রেস ফিরে পেতে পারে তাঁকে সামনে রেখেই। ঘটনাচক্রে ৭৮ বছর বয়সি শীলার পাঞ্জাবী খাতরি পরিবারে জন্ম, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের এককালের শীর্ষ নেতা উমা শঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ তিনি। উমা শঙ্কর কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েছিলেন। রাজ্যপালও ছিলেন দীর্ঘদিন।

কয়েকদিন আগেই উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের  প্রধান পদে নিয়োগ করা হয়েছে রাজ বব্বরকে। পাশাপাশি কংগ্রেস আরও ঘোষণা করেছে, উত্তরপ্রদেশে দলের সমন্বয় ও প্রচার কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে যথাক্রমে সঞ্জয় সিংহ ও প্রমোদ তেওয়ারিকে। এবার ঘোষণা করা হল শীলার নাম।

 

তাঁকে ‘বিরাট দায়িত্ব’ দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে এজন্য কংগ্রেস নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানিয়ে শীলা বলেছেন, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী খুবই জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি প্রিয়ঙ্কাকে গোটা রাজ্যে প্রচারে পাশে চান।

ঘটনা হল, মন্দির-মণ্ডল রাজনীতির জেরে কংগ্রেসের চিরাচরিত ব্রাহ্মণ ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। মায়াবতীর বিএসপি-ও তার কিছুটা দখল করেছে। মধ্য ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে অনেক আসলে তারাই নির্ধারক ভূমিকা নেয়।

এবার শীলার হাত ধরে সেই ভোটব্যাঙ্ক কংগ্রেস পুনরুদ্ধার করতে পারবে কি, সেটাই দেখার।

 

এদিকে শীলাকে মুখ করে কংগ্রেসের ভোটযুদ্ধে নামার সিদ্ধান্তকে ব্যঙ্গ করে বিজেপি বলল, প্রায় ৮০ বছর বয়স ওনার। প্রথমে শোনা যাচ্ছিল রাহুল গাঁধী উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখ হচ্ছেন। তারপর বলা হল প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর কথা। এখন ওরা বলছে দীক্ষিতের নাম। আসলে রাহুল, প্রিয়ঙ্কার ভরাডুবি নিশ্চিত। দীক্ষিতকে সামনে রাখা হল যাতে ব্যর্থতার জন্য ওঁকেই দায়ী করা যায়।

অন্যদিকে শীলার নাম শুনেই কটাক্ষ করছে আমআদমি পার্টি (আপ)-ও। শীলা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে একাধিক অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছে তারা।  সেই প্রেক্ষাপটে আপ নেতা আশুতোষের মন্তব্য, এটা কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘দায়বদ্ধতা’র ‘প্রতিফলন’ বটে! আর দিল্লির জল সরবরাহ মন্ত্রী কপিল মিশ্রের মন্তব্য, কংগ্রেসের শীলাকে উত্তরপ্রদেশে দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার মানে বিজেপি দিল্লিতে তাঁর দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা নিয়ে বিশেষ শোরগোল করবে না।