নয়াদিল্লি: ক্ষমতায় এলে ভারতের এক শতাংশ সবচেয়ে বড়লোকের আয়ের ওপর ৫ শতাংশ সেস বসিয়ে জাতীয় গরিবি দূরীকরণ তহবিল গড়বে। কংগ্রেসের ৮৪-তম প্লেনারি অধিবেশনে এই প্রস্তাব গৃহীত হল। কৃষি, বেকারি ও দারিদ্র্য দূরীকরণ শীর্ষক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওই সেস সরাসরি তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য গরিবি রেখার নীচে থাকা পরিবারের বাচ্চাদের স্কলারশিপ দিতে খরচ করা হবে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, দেশে আয়ের অসাম্য দিনদিন বাড়ছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের গরিব-বিরোধী বিভিন্ন নীতির জন্যই। বিজেপি 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' স্লোগান দিলেও বাস্তবে তার উল্টো কাজ করেছে। বিজেপি শাসনে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ লোকের সম্পদ ৭৩ শতাংশ বেড়েছে, মাঝের থেকে নীচুতলার অর্ধেক মানুষের সম্পদ বেড়েছে মাত্র এক শতাংশ।
ক্ষমতায় এলে আধারকে ন্যাশনাল সোস্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পের আওতায় যোগ্য প্রাপকদের চিহ্নিত করায় আধারকে ব্যবহার করা হবে বলেও জানিয়েছে কংগ্রেস।
বিজেপির 'ভ্রান্ত, বেপরোয়া' কৃষক-বিরোধী নীতির বিরোধিতা করেও কংগ্রেস বলেছে, চাষিরা ক্রমবর্ধমান ঋণের জালে ফেঁসে যাচ্ছে, ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। ফসল উত্পাদনের খরচ বাড়ছে, কমছে কৃষিঋণ। চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হচ্ছে তাদের।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ইউপিএ আমলে কৃষিতে যে বৃদ্ধি হয়েছিল, প্রথম এনডিএ জমানায় (১৯৯৮ -২০০৪) ও দ্বিতীয় এনডিএ আমলে তা অর্ধেকের নীচে নেমে যায়। বিজেপির কৃষক-বিরোধী চেহারা এতেই স্পষ্ট। ২০২২ নাগাদ কৃষি থেকে আয় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হবে বলে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি সরকার চাষিদের বোকা বানাচ্ছে বলেও জানিয়েছে কংগ্রেস।
রাহুল গাঁধীর দল ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থায় চাষি-কেন্দ্রিক ভারসাম্য নিয়ে আসার কথা বলেছে, প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, চাষ থেকে লাভের সম্ভাবনা তৈরি করবে, চাষির আয় বাড়ানোর বিষয়টি মানবিকতা, সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখবে, তাদের মর্যাদা সুনিশ্চিত করবে, তাদের সন্তানদের ভাল পড়াশোনার ব্যবস্থা করবে, তাদের পরিবারের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বন্দোবস্ত করবে, কৃষক ও কৃষক, খেত মজুরদের পেনশনের মাধ্যমে আর্থিক, সামাজিক নিরাপত্তা দেবে। ইউপিএ সরকারের আমলে ঘোষিত কৃষিঋণ মকুবের মতো স্কিম সব প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের জন্য আসবে বলেও জানিয়েছে তারা। ওই স্কিমে তিন কোটির বেশি কৃষক লাভবান হয়েছিলেন বলে দাবি কংগ্রেসের।
কৃষকদের লাভজনক আয় সুনিশ্চিত করার জন্য কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে গঠিত কমিশনের ব্যবহার করা পদ্ধতি খতিয়ে দেখার কথাও বলা হয়েছে কংগ্রেসের প্রস্তাবে। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা খতিয়ে দেখবে, এমন এক নতুন স্কিমের খসড়া পেশ করবে যাতে বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলির পরিবর্তে উপকৃত হন কৃষকরা।