নয়াদিল্লি: প্রস্তাবিত বৃদ্ধির হার বজায় রেখে এগিয়ে যেতে পারলে আগামী বছরে ব্রিটেনকে টপকে ভারত দুনিয়ার পঞ্চম সবচেয়ে বড় অর্থনীতি হয়ে উঠবে। তবে ক্রমবর্ধমান অশোধিত তেলের দাম, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধ এগিয়ে চলার পথে বাধা হতে পারে। ফেসবুক পোস্টে বললেন অরুণ জেটলি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, যে ভাষ্য দেওয়া হচ্ছে, তার সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। গত চার বছর ধরে সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে চলা অর্থনীতি আমরা। আগামী দশককে আর্থিক সম্প্রসারণের দশক হিসাবে দেখতে পারি। বিশ্বব্যাঙ্কের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফ্রান্সকে সাত নম্বরে ঠেলে দিয়ে ভারত হয়ে উঠেছে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০১৭-য় ভারতীয় অর্থনীতির পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। ভারতের জিডিপির মূল্য ২০১৭-র শেষে দাঁড়িয়েছে ২.৫৯৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, ফ্রান্সের ২.৫৮২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
জেটলি লিখেছেন, সহজে ব্যবসা করার পরিবেশ ও বিনিয়োগের পছন্দের জায়গার মাপকাঠিতে ইতিমধ্যেই ভারত ওপরদিকে উঠেছে, যা বলার মতো। আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ও বাণিজ্য সংঘাতের জেরে দুনিয়াজুড়ে তৈরি হওয়া চ্যালেঞ্জের জন্য আজ পরীক্ষার মুখে আমরা। এপ্রিলে ব্যারেল পিছু অশোধিত তেলের দাম ছিল ৬৬ মার্কিন ডলার, যা বর্তমানে প্রতি ব্যারেলে ৭৫ মার্কিন ডলারের আশপাশে রয়েছে।
বর্তমান আর্থিক বছরে ভারতীয় অর্থনীতি বাড়তে পারে ৭-৭.৫ শতাংশ হারে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৭ শতাংশ।




জেটলির দাবি, গ্রাম ভারত ও সমাজের তুলনামূলক কম সুবিধাভোগী অংশ সম্পদের ওপর প্রথম অধিকার পাবে, এটা সুনিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার। সরকারের ব্যয়বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি এটা আগামী দশকে চলতে থাকলে দেশের গ্রামীণ গরিবের ওপর তার প্রভাব হবে গুরুত্বপূর্ণ। এতে ধর্ম, জাত বা সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবার লাভ হবে। কংগ্রেস ভারতের গরিবকে শুধু স্লোগান শুনিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী দিয়েছেন সম্পদ। এতে আরও দ্রুত উন্নয়ন সুনিশ্চিত হবে, আরও তাড়াতাড়ি বেকারি কমবে। তিনি দাবি করেন, সত্তর, আশির দশকে কংগ্রেস সঠিক নীতি, গরিবের কল্যাণে সঠিক ভাবে খরচের বদলে শুধু চটকদার স্লোগান দিয়েছে। ১৯৭১ এর 'গরিবি হটাও' সম্পদ সৃষ্টি নয়, বরং গরিবির পুনর্বিন্যাসের মডেল ছিল। এই বিপথে চালিত দৃষ্টিভঙ্গির ফলে গরিবের জীবনের মান তেমন ওপরের দিকে ওঠেনি। উল্টোদিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কথা যত বলেন, তার চেয়ে বেশি কাজ করেন। তিনি কঠিন টার্গেট, কর্মসূচি সামনে রাখেন যা প্রথমে অসম্ভব না হলেও কঠিন মনে হয়। কিন্তু তিনি বাস্তবে তা প্রয়োগের রাস্তায় হাঁটেন, প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন। গ্রাম ভারতের জন্য সরকারের প্রকল্পগুলির ফলে আয়, সামাজিক সুরক্ষা, জীবনযাত্রার মান, কৃষি থেকে আয়, সবই বাড়বে, আরও ভাল স্বাস্থ্যসুরক্ষা থাকবে।

তবে পাল্টা জেটলিকে কটাক্ষ করেছেন রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। কংগ্রেসের কমিউনিকেশনস ইনচার্জ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে হাতজোড় করে শ্রী অরুণ জেটলিকে বলব, উনি বরং কে দেশের অর্থমন্ত্রী, সে ব্যাপারে ফেসবুক পোস্ট লিখুন। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা ওনার করা উচিত। উনি সেই রহস্যের মীমাংসা করুন। তিনি না পীযুষ গয়াল, কে ভারতের অর্থমন্ত্রী, জেটলি ব্যাখ্যা করে জানান। তাহলে ভারত অন্তত জানতে পারবে, দেশের অর্থনীতির এখনকার এমন বেহাল দশার পিছনে কে আছেন। 'মোদীর অর্থনীতি ভারতের ওপর যে আর্থিক সঙ্কট চাপিয়েছে', তা নিয়ে পোস্ট লিখতেও তিনি অনুরোধ করেন জেটলিকে।