নয়াদিল্লি: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে কটাক্ষ করার জন্য যতক্ষণ না ক্ষমা চাইবেন নরেন্দ্র মোদী, ততক্ষণ সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে বয়কট করা হবে। বৃহস্পতিবার এমনই সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস।
মোদীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে এদিন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল যা বলেছেন, তাতে আমরা ভীষণই হতাশ। আমি মনে করি না, ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে কখনও শুনেছি যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর পূর্বসূরীকে এইভাবে ‘বাথরুমের উপমা’ টেনে এনে অপমান করছেন।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বক্তৃতার প্রেক্ষিতে গতকাল সংসদে ধন্যবাদজ্ঞাপন করতে গিয়ে মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রীর বেনজির আক্রমণ করে বসেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশে অর্থনৈতিক নীতিতে বহু অবদান রয়েছে মনমোহন সিংহের। তাঁর আমলে কেউ তাঁর দিকে আঙুল তুলতে পারেননি। এত দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তাঁর গায়ে বিন্দুমাত্র কালির দাগ লাগেনি।
এরপরই মোদী যোগ করে বলেন, ডক্টর সাব-ই জানেন, বাথরুমে রেনকোট পরে কীভাবে স্নান করতে হয়, তা-ও! প্রধানমন্ত্রীর এমন ভাষায় আক্রমণের বিরুদ্ধে বুধবার কক্ষত্যাগ করে কংগ্রেস। বৃহস্পতিবারও, একই দৃশ্য দেখা যায় সংসদে। এদিন রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা।
পাশাপাশি, লোকসভাতেও এই ইস্যুতে সোচ্চার হয় কংগ্রেস। দলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে বিষয়টি উত্থাপন করলে খারিজ করেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। এরপরই নিম্নকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস। তাদের ঘোষণা, ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত কোনও কক্ষেই নরেন্দ্র মোদীকে বলতে দেওয়া হবে না। এই প্রসঙ্গে দলের নেতা আনন্দ শর্মা জানান, এই ইস্যুতে অন্য দলগুলির সঙ্গেও সমন্বয় করবে কংগ্রেস।
এমনকী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে নিয়ে মোদীর মন্তব্য সংসদের রেকর্ড থেকে মুছে দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। এদিন বিরোধীদের হই হট্টগোলে দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন।
শুধু সংসদে নয়, তার বাইরেও মোদীকে আক্রমণ করে কংগ্রেস। উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ায় নির্বাচনী প্রচারেও মনমোহন-মন্তব্যের জন্য মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীও। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর কোনও সাধারণ দফতর নয়। এর সঙ্গে বিশাল সম্মান জড়িত। এইভাবে পুর্বসূরীকে আক্রমণ করে নিজের দফতরের সম্মানই নষ্ট করেছেন মোদী।